প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বার ২০২৪ , ০৬:১৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
সরকারি কর্মকর্তাদের কয়েক মিলিয়ন ডলার ঘুষ দেয়া ও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণের তথ্য গোপনের ঘটনায় অভিযুক্ত ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে সমন জারি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)।
এসইসি সৌরবিদ্যুতের চুক্তি সুরক্ষিত করতে ঘুষ দেয়ার অভিযোগে আদানি গ্রুপের দুই নির্বাহী গৌতম আদানি এবং তার ভাতিজা সাগর আদানির নামে এ সমন জারি করে ২১ দিনের মধ্যে এই অভিযোগের জবাব দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
নিউইয়র্ক ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের মাধ্যমে পাঠানো সমনে সতর্ক করা হয়েছে, সাড়া দিতে ব্যর্থ হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ডিফল্ট রায় দেয়া হতে পারে। এসইসি অভিযোগসমূহ মার্কিন বিচার বিভাগের আনা অভিযোগগুলো থেকে আলাদা। তবে উভয় অভিযোগই একই বৃহৎ ঘুষ কেলেঙ্করির সাথে যুক্ত।
মার্কিন বিচার বিভাগ এর আগে গৌতম আদানি ও তার ভাতিজা সাগর আদানির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। তবে আদানি গ্রুপ মার্কিন আদালতের এ ফৌজদারি অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করে।
মার্কিন প্রসিকিউটররা অভিযোগ করেন, গৌতম ও তার ভাতিজা সাগর আদানি বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তি সুরক্ষিত করার জন্য ভারতীয় কর্মকর্তাদের পর্যায়ক্রমে ২৬৫ মিলিয়ন ডলার ঘুষ দিতে রাজি হন। আদানির কথিত সহযোগীদের একজন অত্যন্ত চতুরতার সাথে তার ফোন ব্যবহার করে কর্মকর্তাদের দেয়া এই ঘুষের পেমেন্ট ট্র্যাক করেন।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আদানি ও তার ভাতিজা সাগরসহ সাত আসামি ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ভারতের বৃহত্তম সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের কাজ পেতে দুই বিলিয়ন ডলার লাভের আশায় চুক্তি সুরক্ষিত করতে সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে সম্মত হন।
অপরদিকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধিও গৌতম আদানিকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। এক সংবাদ সম্মেলনে রাহুল জোর দিয়ে বলেন, মার্কিন আদালতে আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করা উচিত এবং যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
নরেন্দ্র মোদি আদানিকে তদন্তের হাত থেকে রক্ষা করছেন উল্লেখ করে রাহুল বলেন, নরেন্দ্র মোদি ও আদানি একসাথে থাকলে তারা সুরক্ষিত। ভারতে আদানিকে কিছুই করা যাবে না। এ দেশে মুখ্যমন্ত্রীকে জেলে পাঠানো হয় আর আদানি ২০০০ কোটি টাকার কেলেঙ্কারি করে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কারণ নরেন্দ্র মোদি তাদের রক্ষা করছেন। আদানি ভারত ও আমেরিকায় অপরাধ করেছে। কিন্তু ভারতে আদানির বিরুদ্ধে কোনরকম ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ ২০২৩ সালে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কয়েক দশক ধরে স্টক ম্যানিপুলেশন এবং জালিয়াতির অভিযোগ তোলার পর আদানি নিজের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করার চেষ্টায় প্রায় দুই বছর ব্যয় করেন।
যদিও তার বিরুদ্ধে ওঠা ওই অভিযোগ আদানি অস্বীকার করেছেন। তবে ওই অভিযোগের কারণে মার্কেট সেল-অফ (মার্কেট সেল-অফ হলো বৃহৎ পরিমাণ সিকিউরিটিজের দ্রুত বিক্রয়, যার ফলে তার দাম কমে যায়) হয়েছে এবং সে বিষয়ে ভারতের বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (সেবি) তদন্তও করছে।
সূত্র : বাসস