পঞ্চগড়ে প্রশংসা কুড়ানো বিচারককে ঢাকায় বদলি
পঞ্চগড়ে প্রশংসা কুড়ানো বিচারককে ঢাকায় বদলি
পঞ্চগড় জেলার ঘটনাস্থলে গিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করে প্রশংসা কুড়ানো লিগ্যাল এইড অফিসার (সিনিয়র সহকারি জজ) আবু সাঈদকে বদলি করা হয়েছে। পরবর্তী বদলিকৃত পদ ও কর্মস্থল হিসেবে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচার শাখা-১ এ সহকারি রেজিস্ট্রার (সিনিয়র সহকারি জজ) হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
গত রোববার (২৫ আগস্ট) এ মর্মে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে- প্রধান বিচারপতির সদয় অভিপ্রায় অনুযায়ী বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের পঞ্চগড় জেলা লিগ্যাল এইড অফিসারকে (সিনিয়র সহকারী জজ) বর্তমান কর্মস্থল হতে বদলি করা হয়েছে। তা পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত তার নামের পার্শ্বে বর্ণিত পদে ও কর্মস্থলে প্রেষণে নিয়োগের নিমিত্ত তার চাকরি প্রধান বিচারপতির অধীনস্ত করা হলো। তাই এ বিচারককে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক নির্ধারিত তারিখে বর্তমান পদের কার্যভার বুঝিয়ে দিয়ে অবিলম্বে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে পঞ্চগড় জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে সিনিয়র সহকারী জজ হিসেবে যুক্ত হন বিচারক আবু সাঈদ। তার আগে তিনি নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব প্রশাসন-১ মোহাম্মদ ওসমান হায়দার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের ১৭ জন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে বদলি করা হয়। তার মধ্যে তাকে বদলি করে পঞ্চগড়ের জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার করে বদলির ঘোষণা করা হয়।
পঞ্চগড়ে লিগ্যাল এইড কার্যালয়ে সিনিয়র সহকারী জজ হিসেবে যোগদানের পর থেকেই তিনি বিনামূল্যে সরকারি নির্ধারিত আইন সহায়তা সুবিধা পৌঁছে দিতে ছুটে গেছেন পঞ্চগড়ের প্রত্যন্ত গ্রাম-অঞ্চলে। সেসব এলাকায় স্ব-শরীরে গিয়ে নিষ্পত্তি করেছেন অনেক মামলা।
জমি-জমার বিরোধ, নারী নির্যাতনসহ বিচ্ছেদে দায়ের করা মামলায় যেখানে দীর্ঘ শুনানিতে অপেক্ষা করতে হতো, সেখানে মামলার জট নিরসনে ভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছিলেন এই লিগ্যাল এইডের বিচারক আবু সাঈদ। দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে জটিল বিরোধ সহজেই করেছেন নিষ্পত্তি। তার বিনামূল্যে আইনি পরামর্শ পেয়ে উপকৃত হয়েছেন সহস্রাধিক মানুষ। এছাড়াও আইন সহায়তা পেয়েছেন অর্ধ-শতাধিকের বেশি মানুষ। তার মধ্যস্থতায় দুই শতাধিকের বেশি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এমন সব কাজে নাগরিক সেবায় তিনি ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন জেলার মানুষদের কাছে।
সিনিয়র সহকারী জজ মো. আবু সাঈদ বলেন, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির অভিপ্রায় অনুযায়ী সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে সহকারী রেজিস্ট্রার (সিনিয়র সহকারী জজ) হিসেবে আমার বদলির আদেশ হয়েছে। এখানে যোগদানের পর একদম তৃণমূল পর্যায়ে গিয়ে ভূমি বিরোধসহ বিভিন্ন বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করেছি। এখন আরও বড় পরিসরে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। সেখানেও সর্বোচ্চ নিষ্ঠা ও সততার সাথে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। আগামী ১ সেপ্টেম্বর নতুন কর্মস্থলে যোগদান করবো।