রাশিয়ার আক্রমণ থামাতে ভারতকে আরো বড় ভূমিকা নেওয়ার অনুরোধ করলেন দিল্লি সফররত ইউক্রেনের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী এমিন জাপারোভা। ভারতের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে তার অনুরোধ, আগামী সেপ্টেম্বরে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসেবে ভারত যেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানায়। তবে ভারত জাপারোভাকে এ বিষয়ে কোনো কথা দেয়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এমিন বলেন, ‘আমরা আশা করি, ভারত ইউক্রেনের বিষয়ে আরো সক্রিয়তা বাড়াবে। আমাদের বিশ্বাস, শীর্ষতম স্তরে রাজনৈতিক আলোচনা বড় সাফল্য পাওয়ার পথে প্রথম ধাপ। আমাদের প্রেসিডেন্ট ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার অনুরোধ জানিয়েছে‌ন।’

এদিকে ভারত পশ্চিমের নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য করে রাশিয়া থেকে সস্তায় বিপুল পরিমাণ অশোধিত তেল আমদানি করে চলেছে। এ নিয়ে কিছুটা খোঁচা দিয়ে এমিন জাপারোভা বলেছেন, ‘জ্বালানি সম্পদ ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে ভারতের বাস্তবকে খেয়াল রাখা উচিত।’ তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘শুধুমাত্র জ্বালানি বা সামরিক সরঞ্জামই নয়, আমাদের মতে সমস্ত রকম সম্পদ আমদানির ক্ষেত্রেই বিবিধ উৎস রাখা উচিত। শুধুমাত্র রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল হওয়ার অর্থ, তারা এর সুযোগ নেবে।’

কূটনৈতিক সূত্রের মতে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ছায়ায় এখনো পর্যন্ত জি২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনেকটাই আচ্ছন্ন হয়ে গেছে। সম্ভব হয়নি যৌথ ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা। শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রের পাশাপাশি ভারতে আসার কথা রয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। সুতরাং ওই সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির যেলেনস্কি উপস্থিত হলে কার্যত পণ্ড হবে জি২০-এর কর্মসূচি।

২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলে ভারতের নীরব সমর্থনকে সামনে নিয়ে এসে জাপারোভা আজ নয়াদিল্লিকে প্রতিবেশী সংক্রান্ত বার্তাও দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে ভারতের সামনে তার তাস চীন ও পাকিস্তান। ভারতীয় নেতৃত্ব, কূটনীতিক এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি বলেন, ‘ভারতের বোঝা উচিত যে সব রাষ্ট্র নিজেদের গায়ের জোরে এগোতে চাইছে, তাদের না ঠেকালে বিপদ আছে।’ ইউক্রেনীয় মন্ত্রী বলেন, ‘ভারতেরও সমস্যাজনক প্রতিবেশী হিসেবে চীন ও পাকিস্তান রয়েছে। রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলের ঘটনা ভারতের পক্ষেও তো একটা উদাহরণ। কোথাও যদি ভুক্তভোগী ন্যায় না পায় তা হলে তার ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে বিষয়টি বেড়েই চলবে।’

রাকিব/এখন সময়