হামাসের সঙ্গে সাময়িক যুদ্ধবিরতি কবে থেকে শুরু হবে, সে বিষয়ক কোনো সুনির্দিষ্ট ঘোষণা এখনো আসেনি। তবে বিরতি শেষে গাজা উপত্যকায় ফের ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর অভিযান শুরু করবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

মঙ্গলবার রাজধানী জেরুজালেমে এক জরুরি বৈঠকে হামাসের চার দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব অনুমোদন করে ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। খবর আনাদোলুর।

বৈঠক শেষে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা একটি যুদ্ধের মধ্যে রয়েছি এবং যতদিন আমাদের লক্ষ্য পূরণ না হয়, ততদিন এই যুদ্ধ চলবে।’

তিনি বলেন, ‘এটা (হামাসের প্রস্তাব) মেনে নেওয়া আমাদের জন্য কঠিন ছিল, কিন্তু আমার মনে হয়, আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

গত ৭ অক্টোবর ভোরে ইসরাইলে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। উপত্যকার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত বেড়া ভেঙে ইসরাইলে প্রবেশ করে নির্বিচারে সামরিক-বেসামরিক লোকজনকে হত্যা করে তারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় ২৪২ জনকে।

ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরাইলিদের সংখ্যা ১০৪ জন। বাকি ১৩৮ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকরা রয়েছেন।

হামাসের এই হামলার জবাবে ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বিমানবাহিনী। ১৬ অক্টোবর থেকে সেই অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

ইসরাইলি বাহিনীর অভিযানে গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৪ হাজার। আর গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরাইলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন।

যুদ্ধের শুরুর দিকে হামাসের সামরিক শাখা আল কাসেম ব্রিগেড জানিয়েছিল, তাদের জিম্মায় প্রায় ২৫০ জন ইসরাইলি রয়েছে। তবে পরে হামাস ঘোষণা করে, ইসরাইলি বাহিনীর বোমা হামলার কারণে নিহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন জিম্মি।

গত সপ্তাহে কাতার এবং মিসরের মধ্যস্থতার ভিত্তিতে ইসরাইলের কাছে যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব পাঠায় কাতারে অবস্থানরত হামাসের হাইকমান্ড। সেখানে বলা হয়, যদি ইসরাইল গাজা উপত্যকায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি, কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি, উপত্যকায় ত্রাণপণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে প্রবেশ এবং আহত বেসামরিকদের উপত্যকার বাইরে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণের অনুমতি দেয়— তাহলে নিজেদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে ৫০ জনকে মুক্তি দেবে হামাস।

প্রথমদিকে এই প্রস্তাব আমলে না নিলেও জিম্মিদের পরিবার, দেশের জনগণ ও বহির্বিশ্বের চাপে মঙ্গলবার সেটি অনুমোদন করে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। আইডিএফের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল জোনাথন করনিকাস মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে জানিয়েছেন, হামাস যদি ৫০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তা হলে ইসরাইলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ১৫০ জনকে ছেড়ে দেওয়া হবে।