সামরিক মহড়া শেষ হওয়ার পরও তাইওয়ানকে ঘিরে আছে চীনা যুদ্ধবিমান ও নৌবাহিনীর জাহাজ। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আজ মঙ্গলবার এ কথা জানায়। যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে বৈঠক করে প্রেসিডেন্ট সাই ​​ইং-ওয়েন তাইপেই ফিরে আসার পর শনিবার চীন মহড়া শুরু করে। তাইওয়ান ঘিরে চীনের তিন দিনব্যাপী সামরিক মহড়া গতকাল সোমবার শেষ হয়।

মহড়ার শেষদিনে তাইওয়ান দ্বীপের কাছে ১১টি চীনা যুদ্ধজাহাজ এবং ৭০টি যুদ্ধবিমান নিয়ে গিয়েছিল চীন। মহড়ার নামে বেইজিংয়ের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ আচরণের জন্য সমালোচনা করেছেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ​​ইং-ওয়েন। সামরিক মহড়া শেষ হয়েছে বলে সোমবার রাতে ঘোষণা দেয় চীন। তবে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, আটটি চীনা জাহাজ এখনও দ্বীপের চারপাশে অবস্থান করছে। তবে এর বিস্তারিত জানায়নি তারা। মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, তাইওয়ানের বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী ও উপকূলভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র ক্রুরা নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। পরিস্থিতি অনুযায়ী তাঁরা পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

তাইওয়ানের সরকার বারবারই চীনের এই সামরিক মহড়ার নিন্দা করেছে। সোমবার মধ্যরাতের কিছু আগে নিজের ফেসবুক পেইজে সাই ​​ইং-ওয়েন বলেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ‘আমি বিশ্বের কাছে আমার কাউন্টির প্রতিনিধিত্ব করি’। তাই যুক্তরাষ্ট্রসহ তার অন্য বিদেশ সফরগুলো নতুন কিছু নয় এবং তাইওয়ানের জনগণ এটিই প্রত্যাশা করে।

তিনি অভিযোগ করেন, ‘চীন সামরিক মহড়া শুরু করার জন্য এটি (তার যুক্তরাষ্ট্র সফরকে) ব্যবহার করছে এবং এর মাধ্যমে তাইওয়ান ও অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছে। এই অঞ্চলের একটি প্রধান দেশের জন্য এটি দায়িত্বশীল কোনো মনোভাব নয়।’ সর্বশেষ এই সামরিক মহড়ার সময় নির্ভুল আক্রমণ এবং তাইওয়ানকে চারদিক থেকে অবরোধের অনুকরণ করে চীন। এ সময় সেখানে কয়েক ডজন যুদ্ধবিমান এবং বোমারু বিমানও পাঠায় বেইজিং। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার ৯১টি চীনা সামরিক বিমান দ্বীপের চারপাশে উড্ডয়ন করেছে।

উল্লেখ্য, তাইওয়ান ইস্যুতে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনা চলছে। তাইওয়ান পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ, যা তাইওয়ান প্রণালির পূর্বে চীনা মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। অবশ্য তাইওয়ানকে বরাবরই নিজেদের একটি প্রদেশ বলে মনে করে থাকে বেইজিং। অন্যদিকে চীনের প্রদেশ নয়, বরং নিজেকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র বলে মনে করে থাকে তাইওয়ান। তাইওয়ান চায় দেশের ভবিষ্যৎ তার জনগণের হাতেই থাকবে। তবে তাইওয়ানকে চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে বেইজিংয়ের চেষ্টার কমতি নেই।

রাকিব/এখন সময়