পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তানের গোয়াদরে চীনবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা (ভোয়া)।

সংবাদমাধ্যমটির চীনা ভাষার সংস্করণে প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়। এতে জানানো হয় গোয়াদরে মাছ ধরা ট্রলারগুলোকে আটক, হয়রানি এবং অন্যায়ভাবে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশির প্রতিবাদে স্থানীয়রা চীনবিরোধী বিক্ষোভ করেছে।

বন্দরের প্রধান সড়কে হাজার হাজার জেলে এ বিক্ষোভে অংশ নেন। চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসে এই খবরকে ভুয়া উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এতে জানানো হয়, জেলেদের ট্রলার আটক ও হয়রানির বিরুদ্ধে স্থানীয়রা বিক্ষোভ করেছেন। এর সঙ্গে চীনবিরোধীতার সম্পর্ক নেই। চীন-পাকিস্তান সহযোগিতার কোনো বিষয়ও জড়িত নয়। চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে বন্ধুত্ব নস্ট করার উদ্দেশ্য নিয়েই কেবল ভয়েস অব আমেরিকা এই ‘ভুয়া’ খবর প্রকাশ করেছে।

চীনের দূতাবাস ও পাকিস্তানের এক সাংবাদিককে উদ্বৃত করে গ্লোবাল টাইমস জানায়, প্রতিবেদনটি ছিল গাল-গপ্পে ভরপুর।

বিষয়টি নিয়ে ৩০ নভেম্বর চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন, ‘গোয়াদর অঞ্চলে চীনবিরোধেী বিক্ষোভের খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’

তিনি জানান, ভোয়ার প্রতিবেদনে মাছ ধরার ট্রলার ও সিপিইসির সাথে যুক্ত সড়কের কথা উদ্বৃত করে বিতর্ক তৈরি করার চেস্টা করা হয়। বাস্তবতা হচ্ছে ওখানে জেলেদের ট্রলারকে বাধা দেওয়ার মতো কোনো চীনা নৌযান নেই। আর ওই সড়কটি ‘সিপিইসি’ প্রকল্পের আওতায়।

গোয়াদরের স্থানীয় সাংবাদিক ইয়াসিন হাবিব খান বিক্ষোভের খবর কাভার করেছিলেন। তিনি ভয়েস অব আমেরিকার পরিবেশিত খবরটি ভিত্তিহীন বলে গ্লোবাল পোস্টকে জানান।

তিনি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে একটি প্রতিবেদনে লেখেন, ওই ‘বিক্ষোভকে পশ্চিমাদের স্বার্থে চালিয়ে দেওয়ার চেস্টা করা হয়েছে।’

গোয়াদর বিক্ষোভের সর্বোচ্চ নেতা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা হেদায়াত উর রহমানকে উদ্ধৃত করে তিনি লেখেন, ‘চীন এবং আমরা পারস্পরিক বন্ধু। আমরা চীনের নেতৃত্বাধীন উন্নয়ন ও গোয়াদরে সিপিইসির বিরোধী নই। চীন গোয়াদর বন্দর পরিচালনা করছে বলে স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ নয়। স্থানীয়রা মূলত প্একজন পাকিস্তানী হিসেবে তাদের প্রাপ্য অধিকারের আন্দোলন করছে।’

চীনে পাকিস্তান দূতাবাসের এক প্রেস অফিসার বৃহস্পতিবার গ্লোবাল টাইমসকে বলেন ‘এই ধরনের ভুয়া খবর চীন ও পাকিস্তানের সম্পর্কে ফাটল ধরাতে পারবে না।’

গত ৩০ নভেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত হয়ে বলছি কোনো চীনা ট্রলার ওই এলাকায় মাছ ধরতে বাধা দিচ্ছে না।’

খবরে প্রকাশ, বেলুচিস্তানের গোয়াদর সমুদ্রবন্দরসংলগ্ন প্রধান সড়কে হয়রানির প্রতিবাদে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, সরকার যত্রতত্র চেকপোস্ট বসিয়ে জনসাধারণকে হয়রানি করছে এবং সমুদ্রে মাছধরা ট্রলারকে বাধা দিচ্ছে, আটক করছে। এতে মাছ ব্যবসায়ের সাথে জড়িত জেলে ও অন্যরা বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

এখন সময়/শামুমো