কোনো মতবাদ-তত্ব দিয়ে আমাকে চমকে দিতে পারবে না,
অমুকের অমুক গ্রন্থটি পড়িনি বলে কি
আমি বিচলিত হবো?
মোটেও না।
কেননা আমি তো ভালো করে জানি
পৃথিবীর বহু কিছু আমি জানি না, পড়িনি বহু গ্রন্থ
এসবে হীনমন্যতা নেই একদম,
আমি প্রতিদিন পাঠ করি এক অনির্বচনীয় গ্রন্থ, অনিন্দ্য মানুষ,
যে গ্রন্থের মুখবন্ধ লিখেছেন পয়গম্বরেরা,
শ্রমিকের হাতুড়ি নির্মাণ করেছে ছন্দের অনবদ্য গতি,
অক্ষরেরা প্রাণ পেয়েছে সহস্ত্র বছরের
বিবর্তনে মসৃণ মৃত্তিকা,
পোড়ামাটির গহন থেকে উঠে আসা সবুজ অরণ্য,
হাঙরের দাঁত পেরুনো সমুদ্র শৈবালে;
এই বৈচিত্র্যময় গ্রন্থের এক উজ্জ্বল অধ্যায়ে ধ্যানমগ্ন বুদ্ধ,
আরেক অধ্যায়ে মুহাম্মদ,
মরিয়ম-তনয় প্রদীপ্ত ঈসা কল্যাণের দুই বাহু
প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে আছেন একটি দাগের ওপর।
বড়ু চণ্ডিদাসের পৃষ্ঠায় শেষ বাক্যটি রচনা করেছেন কাজী নজরুল
রবীন্দ্রনাথ সমাপ্তি টেনে সেই অধ্যায়ের শেষে এঁকে দেন পুরো একটি বিমূর্ত চিত্রকলা।
এই গ্রন্থের একটিমাত্র বাক্য সক্রেটিস,
হেগেল, কার্ল মার্ক্স দুটি প্যারাগ্রাফ
বিজ্ঞান একটি জিজ্ঞাসা চিহ্নমাত্র,
যা অনবরত জন্ম দিতে থাকে আরো আরো নতুন জিজ্ঞাসা।
শাদা-কালো নির্বিরোধ পরস্পর জড়াজড়ি করে
শুয়ে আছে অক্ষর এবং পৃষ্ঠা হয়ে।
আমি রোজ পাঠ করি এই অনিন্দ্য সুন্দর গ্রন্থ।
তোমাদের দুস্প্রাপ্য জ্ঞানের তাকে তুলে রাখা মহামূল্যবান গ্রন্থগুলো
আজও পড়িনি বলে আমি বিচলিত নই একটুও।
হলিসউড, নিউইয়র্ক। ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২।