রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা হবে মস্কোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। গতকাল বৃহস্পতিবার টেলিগ্রামে এই বার্তা দিয়েছেন দিমিত্রি। পুতিনকে যে দেশ গ্রেপ্তারের চেষ্টা করবে সে দেশেই রাশিয়ার অস্ত্র আঘাত হানবে বলে বৃহস্পতিবার মন্তব্য করেন তিনি।

নেদারল্যান্ডসের হেগ-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গত সপ্তাহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। ইউক্রেনে শিশুদের জোর করে রাশিয়ায় তুলে নিয়ে যাওয়ার ‘অপরাধে’ এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।

মেদভেদেভ বলেছেন, পৃথিবীর কোনো দেশে রাশিয়ার প্রধান গেলে তাকে যদি গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে রাশিয়া পুরোদস্তুর যুদ্ধ ঘোষণা করবে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেছেন, ধরা যাক পুতিন জার্মানি গেলেন এবং সেখানে তাকে গ্রেপ্তার করা হলো। সে ক্ষেত্রে রাশিয়ার সব মিসাইল বার্লিনের পার্লামেন্ট লক্ষ্য করে ছোঁড়া হবে। বার্লিন ধ্বংস করে দেওয়া হবে।

পুতিনের শীর্ষ এই মিত্র বলেছেন, ‘চলুন কল্পনা করি, তবে এটা পরিষ্কার যে এমন পরিস্থিতি কখনই ঘটবে না। কিন্তু তবুও এই বিষয়ে কল্পনা করা যাক। একটি পারমাণবিক রাষ্ট্রের বর্তমান প্রধান জার্মান ভূখণ্ডে পৌঁছলেন এবং গ্রেপ্তার হলেন। এটা কী? এটা রুশ ফেডারেশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা।’

মেদভেদেভ বলেন, ‘যদি এটা ঘটে, তাহলে আমাদের সমস্ত শক্তি, রকেট, অন্যান্য অস্ত্র এবং আরো অনেক কিছু বুন্দেসতাগে চ্যান্সেলর অফিসে উড়ে যাবে।’ রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান মেদভেদেভ বলেন, আইসিসির সিদ্ধান্ত পশ্চিমাদের সঙ্গে খারাপ সম্পর্ককে আরো গুরুতর করবে।

হেগে আন্তর্জাতিক আদালতে এই রায় ঘোষণা হওয়ার পরে এই প্রথম রাশিয়ার কোনো উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এ বিষয়ে মুখ খুললেন। মেদভেদেভ জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক আদালতের প্রসিকিউটর করিম খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করছে রাশিয়া। যেভাবে পুতিনের শাস্তি ঘোষণা হয়েছে, তা ভুল বলে তাদের দাবি। কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে এভাবে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায় না। এভাবে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা যায় না। খান ইচ্ছাকৃতভাবে এই কাজ করেছেন বলে রাশিয়ার দাবি। এবং সে কারণেই তার বিরুদ্ধে রাশিয়ার কোর্টে মামলা শুরু হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৬টি দেশ পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া সমর্থন করেছে। কিন্তু হাঙ্গেরি জানিয়ে দিয়েছে, তারা এই রায় মানছে না। পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া পছন্দ করছে না। পুতিন হাঙ্গেরি গেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রাকিব/ এখন সময়