মুসলিম উম্মাহ অফ নর্থ আমেরিকা (মুনা) নিউইয়র্কের বাংলাদেশী সাংবাদিকদের সম্মানে আয়োজন করে এক ইফতার মাহফিলের। মুনা সেন্টার অফ জ্যাকসন হাইটসে আজ ১৯শে মার্চ, রোজ মঙ্গলবার আয়োজিত ইফতার মাহফিলে স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রোনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন সংগঠনটির কর্মকর্তাবৃন্দ। সংক্ষিপ্ত এ আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন মুনার ন্যাশনাল মিডিয়া ডিপার্টমেন্ট এঁর ডিরেক্টর আনিসুর রাহমান গাজী।

ইফতার মাহফিল পরিচালনা ও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মুনার ন্যাশনাল সোস্যাল বিভাগের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরিফ। তিনি সাংবাদিকদেরকে স্বাগত জানান এবং কমিউনিটির কল্যাণে তাদের অবদানের কথা স্মরণ করেন। এর আগে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা হামিম। এরপর অনুষ্ঠানে ইসলামিক সঙ্গীত পরিবেশন করেন আরাফাত রাহমান।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট হারুন অর রশীদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আরমান চোধুরি, ন্যাশনাল এসিস্টাণ্ট ডিরেক্টর আবু উবায়দা, এবআল কোরান দাওয়া সেন্টারের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডঃ মোঃ রুহুল আমিন।

সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, “এখন সময়” এবং “এমসি টিভির” সত্ত্বাধিকারী কাজী শামসুল হক, সিনিয়র সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন, টাইম টিভির কর্ণধার আবু তাহের। সাপ্তাহিক প্রবাস সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদ, ও এমসি টিভির রিপোর্টার সায়েম শুভ। এছাড়া অন্যান্য সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, ইউএনের সালাউদ্দিন আহমেদ, জন্মভুমির সম্পাদক রতন তালুকদার, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের প্রেসিডেন্ট মনোয়ারুল ইসলাম, এবং সেক্রেটারি মোমিন মজুমদার।

সাংবাদিকগণ যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী মুনার সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকান্ডের প্রশংসা করেন। তারা বলেন, মুনার কার্যক্রম আমাদের সামাজিক, পারিবারিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ উজ্জীবিত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তারা মুনার চলমান ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

ইফতার মাহফিলে মূল বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি সংগঠনের প্রেসিডেন্ট হারুন অর রশীদ, সমাজ বিনির্মাণে সাংবাদিকদের অবদানের কথা উল্লেখ করে তাদের সাথে সম্মিলিতভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

হারুন অর রশীদ বলেন, মুসলিম উম্মাহ অফ নর্থ আমেরিকা সংক্ষেপে (মুনা) হচ্ছে আমেরিকার একটি দাওয়াতি ও সামাজিক সংগঠন। মানুষের ব্যক্তিগত, নৈতিক ও সামাজিক মানোন্নয়নের জন্য সার্বিক প্রচেষ্টা চালানোর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় এই সামাজিক সংগঠনটি। ১৯৯০ সালে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে করপোরেশনভুক্ত হওয়া সংগঠনটি বর্তমানে ৪০টিরও বেশি অঙ্গরাজ্যে নিয়মিত কার্যক্রম চালাচ্ছে। সূচনা লগ্ন থেকে একটি দাওয়াতি সংগঠন হিসেবে মুনা মুসলিমদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে ইসলাম পালনের পাশাপাশি অমুসলিমদের কাছেও ইসলামের সঠিক শিক্ষা তুলে ধরার জন্য কার্যক্রম চালাচ্ছে।
মুনা সম্পূর্নভাবে রাজনৈতিক বিবর্জিত একটি সংগঠন। বাংলাদেশী আমেরিকান নতুন প্রজন্মের মাঝে ধর্মীয় মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা এবং ভবিষ্যতে এই ধারা অব্যাহত কিভাবে রাখা যায় সে লক্ষ্যে কাজ করছে মুনা। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত মুনা ২৪টি ইসলামিক সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছে নিউইয়র্ক সহ বিভিন্ন স্টেটে। মুনার পাঁচটি বিভাগের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হয়। মুনার প্রধান উদ্দেশ্য হলো ইসলামী দাওয়াত মানুষের কাছে পৌছে দেয়া। এজন্য আরবীর পাশাপাশি, বাংলা, ইংরেজী, স্প্যানিশ ও চায়নিজ ভাষায় অনুবাদকৃত কোরআন পৌছে দেয়া হচ্ছে মানুষের দ্বারে দ্বারে। সাম্প্রতিক কালে লক্ষাধিক কোরআন বিতরণ করেছে মুনা। এছাড়া কোরআন শিক্ষার বিশেষ ব্যবস্থা ইতোমধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বলে জানান মুনার প্রেসিডেন্ট। সামাজিক সেবায়ও মুনা অনন্য ভূমিকা পালন করছে বলে জানান তিনি।
করোনা মহামারির সময় মুনা খাদ্য বিতরণ শুরু করে কমিউনিটিতে যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। নিউইয়র্ক সিটির ১৭টি স্থানে মুনা প্রায় প্রতি সপ্তাহেই বিনামূল্যে দরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্য বিতরণ করছে। মুনা প্রতিষ্ঠিত কোরআন একাডেমী ফর ইয়াং স্কলারস একটি বড় ধরণের কার্যক্রম।

মুনা সেন্টার অফ জ্যাকসন হাইটসের সভাপতি মোমিন মজুমদারের পরিচালনায় ইফতার মাহফিলের অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয়। আলোচ্য অনুষ্ঠানে সংগঠনটির কয়েকজন কর্মকর্তা বক্তব্য রাখেন।