জর্ডানের লোহিত সাগর তীরবর্তী আকাবা বন্দরে বিষাক্ত ক্লোরিন গ্যাস লিক হয়ে ছড়িয়ে পড়ায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও আড়াই শতাধিক মানুষ। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (২৮ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা ও টিআরটি ওয়ার্ল্ড। অবশ্য বিষাক্ত ক্লোরিন গ্যাস লিকের এই ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা ১১ বলে জানিয়েছে আরেক সংবাদমাধ্যম বিবিসি। জর্ডানের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্রেনের ত্রুটির কারণে একটি রাসায়নিক স্টোরেজ কন্টেইনার নিচে পড়ে গেলে বিষাক্ত রাসায়নিক ছড়িয়ে পড়ে এবং এতে করে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।

এদিকে দুর্ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্লাটফর্মে ছড়িয়ে পড়েছে। ভাইরাল ওই সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ক্লোরিন গ্যাসভর্তি ওই কন্টেইনারটি ক্রেনের মাধ্যমে ওপরের দিকে উঠানো হচ্ছে এবং তারপর হঠাৎ করে এটি জাহাজের ওপরে পড়ে এবং বিস্ফোরিত হয়।

এর পরপরই উজ্জ্বল হলুদ এই গ্যাসের বিপুল অংশ সেখানে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায় এবং এর ফলে ঘটনাস্থলে থাকা মানুষকে নিরাপত্তার জন্য দৌড়াতে দেখা যায়। জর্ডানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, রাসায়নিক ছড়িয়ে পড়ার কারণে আহতদের মধ্যে ১৯৯ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

বিবিসি বলছে, ক্লোরিন হলো এমন একটি রাসায়নিক যা শিল্প-কারখানা এবং গৃহস্থালী পরিষ্কারের পণ্যগুলোতে ব্যবহৃত হয়। স্বাভাবিক তাপমাত্রা এবং চাপে এটি মূলত হলুদ-সবুজ একটি গ্যাস, তবে সংরক্ষণ ও অন্যস্থানে পরিবহনের জন্য এটিকে চাপ দিয়ে ঠান্ডা করা হয়।

এদিকে এই ঘটনার পর জর্ডানের প্রধানমন্ত্রী বিশার আল-খাসাওনেহ আকাবা বন্দরে যান এবং দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাজেন ফারায়াকে গ্যাস লিক ও এর কারণে হতাহতের ঘটনার তদন্ত তদারকি করার নির্দেশ দেন। আকাবার বন্দরের ডেপুটি ডিরেক্টর টিভি চ্যানেল আলমামলাকা’কে বলেছেন, জাহাজে ওঠানোর সময় কন্টেইনারটিকে বহনকারী একটি ‘লোহার দড়ি’ ছিড়ে যায় এবং এতে করে এটি নিচে পড়ে যায়।

বিবিসি বলছে, কন্টেইনারটিতে ২৫ থেকে ৩০ টন ক্লোরিন ভরা ছিল এবং জর্ডানের আকাবা বন্দর থেকে সেগুলো জিবুতিতে রপ্তানি করা হচ্ছিল।

রাকিব/এখন সময়