আগামী নির্বাচনের আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর ব্যাপারে সরকারের চিন্তা-ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। মন্ত্রী বলেন, ‘তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেছেন। যদি বাড়াবাড়ি করা হয়…। কারণ নির্বাহী আদেশ যেকোনো সময় ব্যবহার করা যায় বা বাড়ানো যায়।’

জাতীয় সংবিধান দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ধানমন্ডির ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল’ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স (বিলিয়া) আয়োজিত এক সেমিনারে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এসেছি। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার যাতে বাস্তবায়ন করা যায়, সেজন্যই আমরা সরকার গঠন করেছি। কাজও করে যাচ্ছি। যদি নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের জন্য কোনো আইন করার ক্ষেত্রে দলের বিরুদ্ধে ভোট দিই, তাহলে তো আমি যে ম্যানডেট নিয়ে নির্বাচিত হয়ে এসেছি, তার বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া হবে। সেই ক্ষমতা কিন্তু জনগণ আমাকে সংসদ সদস্য হিসেবে দেয়নি।’

মন্ত্রী বলেন, আমি যদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য হতাম, তাহলে আমার ইচ্ছামতো ভোট দিতে পারতাম। সুতরাং যেখানে আমি দলের প্রতীক নিয়ে, দলের ইশতেহার দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এসেছি, সেখানে দলের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারি না।

তিনি বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আমরা ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের অনেক কিছুই ফিরে পেয়েছি। ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে আর কিছুটা ফিরিয়ে পাওয়ার চেষ্টা করেছি। সেখানে কিছুটা বাধা-বিপত্তি এসেছে এবং এটি এখন সাবজুডিস ম্যাটার। আমরা অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছি। তার কারণ আমরা বাহাত্তরের মূল সংবিধানে ফিরে যেতে চাই। কখন, কীভাবে কোন বাস্তবতার নিরিখে এটা করা হবে, সেটা দল ও সরকার নির্ধারণ করবে।

বিচারপতি অপসারণ ক্ষমতা সংক্রান্ত সংবিধানের ৯৬(২) অনুচ্ছেদ বা ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় কার্যকর না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বিষয়ে একটি রিভিউ পিটিশন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে পেন্ডিং আছে। আশা করছি, এ রিভিউ পিটিশনের শুনানি কিছুদিনের মধ্যেই শেষ হবে। এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্ট যেভাবে রায় দেবেন, আমরা ঠিক সেভাবেই কাজ করবো। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় উচ্চ আদালতে তারেক রহমানের সাজা বাড়ানোর জন্য আপিল করা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা অপেক্ষা করুন, দেখুন কী হয়।’

বিলিয়ার চেয়ারপারসন ব্যারিস্টার এম আমির-উল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে অবসরে যাওয়াি বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির, সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমিরসহ বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন।

রাকিব/এখন সময়