হিজাব আইন ভঙ্গের অভিযোগে আটক তরুণীর পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভে উত্তাল ইরান। এ ঘটনার প্রতিবাদে লোকজন রাস্তায় নামলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে পাঁচ জন মারা যান। আহত হয়েছেন অন্তত ৭৫ জন। বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিবিসি’র এক খবরে বলা হয়েছে, ইরানের কুর্দিস্তান প্রদেশে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে পাঁচ জন মারা যান। তবে মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর থেকে দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হচ্ছে। এদিন দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কামারানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন।

প্রতিবাদ বিক্ষোভে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংস প্রতিক্রিয়ার কড়া সমালোচনা করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন। মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়ে সংস্থাটি বলছে, তার মর্মান্তিক মৃত্যু, নির্যাতনের অভিযোগ এবং পরবর্তী সময়ে কী ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে তার সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত হতে হবে। মাহসার পরিবার যে অভিযোগ এনেছে সেটিও গুরুত্বসহকারে দেখতে হবে।

এদিকে মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে কানাডা, জার্মানি ও তুরস্কসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ইরান সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় অনেকে মাথার চুল কেটে প্রতিবাদ জানান। ‘সঠিকভাবে’ হিজাব না পরার কারণে মাহসা আমিনি নামে ২২ বছর বয়সি এক তরুণীকে সম্প্রতি গ্রেফতার করে ইরান পুলিশ। এর পর ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে কোমায় চলে গেলে তাকে ‘মারধরের’ অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। এর মধ্যেই গত ১৬ সেপ্টেম্বর মারা যান মাহসা আমিনি।

ইরানের বার্তা সংস্থা ফারসের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম আল-আরাবিয়া জানিয়েছে, মাহসা নামে ওই তরুণী চলতি সপ্তাহের শুরুতে ইরানের কুর্দিস্তান প্রদেশ থেকে রাজধানী তেহরানে তার আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান।

এ সময় ‘সঠিকভাবে’ হিজাব না পরায় তাকে গ্রেফতার করে ‘গাশত-ই এরশাদ’ নামে পরিচিত ইরানের নৈতিকতা পুলিশ। ‘সঠিকভাবে’ হিজাব না পরার যুক্তি হিসেবে তখন পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, চুল পুরোপুরি না ঢাকার জন্য মাহসা আমিনিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রাকিব/এখন সময়