ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও ভারি বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় জেলার ৯টি উপজেলার দুই শতাধিক চর ও নদী সংলগ্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, আজ শনিবার সকাল ৬টায় সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এছাড়া পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও নুনখাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৭ ও কাউনিয়ায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম সদর, উলিপুর, ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী ও চিলমারী উপজেলার বিভিন্ন চর ও নদী-সংলগ্ন এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতর ও মাঠে পানি ওঠায় প্রায় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে।

এদিকে, পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার ৩০টি পয়েন্টে নদীভাঙন তীব্র রুপ নিয়েছে। বিলীন হচ্ছে বাস্তভিটা ও আবাদি জমি। ভাঙনে বিলীনের ঝুঁকিতে রয়েছে ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। ফসলের মধ্যে রয়েছে পাট, তিল, ভুট্টা ও সবজি। সদর উপজেলার নওয়াবশ, কদমতলা ও কাচির চরে কয়েকশ একর জমির পটলের ক্ষেত নিমজ্জিত হয়েছে। বন্যা ও টানা বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে মরিচ ক্ষেত। দেড় শতাধিক ছোট বড় পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। চরাঞ্চলের সড়কগুলো তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগের ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নীচু চরের বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় লোকজন আসবাবপত্র নিয়ে উঁচু জায়গায় স্থানান্তরিত হচ্ছে। অনেকেই ঘরের ভেতর চৌকি উঁচু করে অবস্থান নিয়েছেন। দেখা দিয়েছে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও পশুখাদ্যের সংকট।

জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত রৌমারী উপজেলায় ৬শত প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে ২০ লক্ষ টাকা ও ৪০০ মেট্রিক টন খাবার মজুদ রয়েছে বলে জানান তিনি।