মাগুরার শ্রীপুরের ছনগাছা গ্রামে এক স্কুলছাত্রীকে বাড়ি থেকে ‘তুলে আনতে’ গিয়ে গণপিটুনিতে রাসেল শেখ (২২) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মঞ্জুরুল জোয়ার্দার (২২) ও রাজু আহমেদ (২৩) নামে অপর দুই যুবক আহত হয়ে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে ভর্তি।

নিহত রাসেল শ্রীপুর উপজেলার শ্রীকোল ইউনিয়নের বরিশাট গ্রামের দলিল শেখের ছেলে। অন্যদিকে মেয়েটি স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী।

ঘটনার বিষয়ে নিহত রাসেলের স্বজন ও ওই স্কুলছাত্রীর পরিবারের কাছ থেকে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। ঘটনার বিষয়ে মেয়েটির মা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মঞ্জুরুল আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে সে প্রায়ই আমার মেয়ের গতিরোধ করে প্রেমের প্রস্তাব দিত। এ জন্য চার মাস তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ ছিল। আমরা উপায় না দেখে বুধবার মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিলাম। এ কথা কোনোভাবে জানতে পেরে মঞ্জুরুল তার বখাটে কিছু বন্ধু নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমাদের বাড়িতে এসে আমার মেয়েকে জোরপূর্বক টেনে-হিঁচড়ে তুলে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় আমাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাদের ধাওয়া দিলে বখাটেরা দ্রুত মোটরসাইকেল নিয়ে পালানোর সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়। পরে শুনেছি তাদের মধ্যে একজন মারা গেছে। এখানে আমাদের কোনো দায় নেই। ‘

মেয়েটির বাবা ও মেয়েটিকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে নিহত রাসেলের বন্ধু মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মঞ্জুরুল জোয়ার্দার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে পার্শ্ববর্তী ছনগাছা গ্রামের একটি মেয়ের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ১৪ জুন মঙ্গলবার মেয়েটি তার এক বন্ধুর মাধ্যমে খবর দেয় তার অভিভাবক তাকে অন্য ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিচ্ছে। এ খবর জানার পর আমরা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পাঁচ বন্ধু দুই মোটরসাইকেলে মেয়েটির বাড়িতে গিয়েছিলাম তার সঙ্গে দেখা করার জন্য। এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই মেয়ের পক্ষের লোকজন লাঠিসোঁটা দিয়ে আমাদের মারপিট শুরু করে। এতে আমিসহ মোট তিনজন গুরুতর আহত হই। পরে আমরা সেখান থেকে পালিয়ে আসি। আহত অবস্থায় প্রথমে আমাদের মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাসেলের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বুধবার ভোরে তার মৃত্যু হয়। ‘

শ্রীপুর থানার ওসি প্রিটন সরকার বলেন, ‘শ্রীপুরের ছনগাছা গ্রামে এক স্কুলছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে আনার ঘটনায় রাসেল নামের এক যুবকের মৃত্যুর খবর আমরা জেনেছি। এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তদন্ত চলছে। ‘