বাংলাদেশের রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।

আজ (রবিবার) সকালে বিএনপির মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার করোনা সংক্রান্ত কোনো জটিলতা নেই। গতকাল (শনিবার) হাসপাতালে তার শ্বাসকষ্ট (সাফোকেশন) দেখা দিলেও আজ শ্বাসকষ্ট হচ্ছে না।

এদিকে, বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেয়ার দাবিতে আজ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে দলের নেতা-কর্মীরা।

রোববার সকাল ১০টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে এক সমাবেশে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলে, “গতকাল ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার বিষয়ে সরকারের কোনো দায় নেই।’ আল্লাহ না করুক, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারকেই দায় নিতে হবে। অবিলম্বে তাঁকে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।’

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়া কয়েকবার মৃত্যুর হাত থেকে চিকিৎসকদের সুচিকিৎসায় বেঁচে এসেছেন। গতকাল রাতে চিকিৎসকদের সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তে তিনি ফিরে এসেছেন। এখন উনার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন, যা দেশে নেই। তাই, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে পাঠাতে হবে।’

সমাবেশে অংশ নিতে এদিন সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন থানা এবং ওয়ার্ড থেকে ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপিসহ দলটির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ছোট ছোট মিছিল নিয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে হাজির হন। এক পর্যায়ে প্রেস ক্লাব এলাকায় লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। সমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রেস ক্লাবসহ এর আশপাশের এলাকায় বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়।

ওদিকে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এ আদেশের ফলে তার বিরুদ্ধে বিচারিক আদালতে মামলা চলতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

আজ প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এর আগে গত রোববার (৫ জুন) এ বিষয়ে শুনানি শেষ হয়। এর পর আদেশের জন্য আজকের দিন ঠিক করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের পর অনুসন্ধানে নেমে শামীম ইস্কান্দারকে সম্পদ বিবরণী জমা দিতে ২০০৭ সালে নোটিশ দেয় দুদক। অনুসন্ধান শেষে তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৫ মে রাজধানীর রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি। এ মামলায় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিনও নেন শামীম ইস্কান্দার ও তার স্ত্রী।

এরপর শামীম ইস্কান্দরের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৯ সালে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট। তা আপিল বিভাগের রায়েও বহাল থাকে। পরে ২০১৯ সালে এ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন আদালত।

এর মধ্যে ২০১৬ সালে এ মামলা বাতিল চেয়ে শামীম ইস্কান্দার আবেদন করলে শুনানি শেষে তা খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। এরপর এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিলের আবেদন (লিভ টু আপিল) করেন শামীম ইস্কান্দার ও তার স্ত্রী।