কুড়িগ্রাম সফরে আসছেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক। তিনি আগামী ২৮ মার্চ বাংলাদেশ ও ভুটান সরকারের যৌথ উদ্যোগে কুড়িগ্রামে জিটুজি ভিত্তিক প্রস্তাবিত ‘ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’-এর জন্য নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করবেন। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য নির্ধারিত স্থান পরির্দশন শেষে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন এ তথ্য জানান।

সফরসূচি থেকে জানা গেছে, ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক আগামী ২৫ মার্চ একটি বিশেষ বিমানে তিন দিনের সফরে বাংলাদেশ আসবেন। ঢাকায় অবস্থান কালে তিনি সমঝোতা স্মারকে সই করবেন। ২৮ মার্চ বাংলাদেশ ও ভুটান সরকারের যৌথ উদ্যোগে কুড়িগ্রামে প্রস্তাবিত ‘ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’-এর জন্য নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করবেন। এরপর তিনি জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দর পথে ভারত হয়ে ভুটান ফিরে যাবেন।

২০২৩ সালের মে মাসে লন্ডনে ভুটানের রাজা ও রানীর সঙ্গে এক দ্বিপক্ষীয় সভায় কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ ও ভুটান সরকারের যৌথ উদ্যোগে কুড়িগ্রামে জিটুজি ভিত্তিক প্রস্তাবিত ‘ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ স্থাপনের জন্য জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে ধরলা ব্রিজের পূর্বে কুড়িগ্রাম-ভূরুঙ্গামারী সড়কের পাশে অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য জায়গা নির্ধারণ জেলা প্রশাসন ও বেজা।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সদরের ভোগডাঙা ইউনিয়নের মাধবরাম মৌজার অন্তর্ভুক্ত ১৩৩ দশমিক ৯২ একর খাস জমি অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) হস্তান্তর করেছে জেলা প্রশাসন। ধরলা ব্রিজের পূর্ব প্রান্তে সৈয়দ ফজলুল করিম (রহ.) জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার উত্তর-পূর্ব দিকে এই খাস জমির অবস্থান। প্রয়োজনে ওই স্থানে জমি অধিগ্রহণেরও সুযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রামে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শনে এসে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন সাংবাদিকদের জানান, রাজার এবারের সফরে উভয় দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর দুই দেশের সামগ্রিক আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা এবং স্থান প্রস্তুত করে আগামী তিন বছরের মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে। অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু হলে কুড়িগ্রামের মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।

ধরলা নধীর পারে অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প কারখানা স্থাপন করলে নদী ও পরিবেশের ওপর এর বিরূপ প্রভাবের প্রশ্নে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে এখানে শিল্পায়ন হবে। ফলে পরিবেশ কিংবা নদীদূষণের কোনও সম্ভাবনা থাকবে না।’

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যানের অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শনকালে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- বেজার যুগ্ম সচিব ও জেনারেল ম্যানেজার ড. শেখ মোহাম্মদ জোবায়েদ হোসেন, কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ, পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) উত্তম কুমার রায়, কুড়িগ্রাম পৌর মেয়র কাজিউল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসফিকুল আলম হালিম প্রমুখ।