প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সল আতিক বিন কাদের এ আদেশ দেন।

এদিন আসামিপক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন, সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ আইনজীবী জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল জামিনের বিরোধিতা করেন।

শুনানি শেষে আদালত পাঁচ হাজার টাকা বন্ডে তাদের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। এ মামলায় জামিন পাওয়ায় তাদের মুক্তিতে আর কোনো বাধা রইল না বলে জানান তাদের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ।

তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল তার বিরুদ্ধে থাকা ১১টি ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে থাকা ১০টি মামলার সবকটিতে জামিন পাওয়ায় তাদের মুক্তিতে আর কোনো বাধা রইল না।

গত ১ ফেব্রুয়ারি সিএমএম আদালতে ফখরুলের এবং গত ২৪ জানুয়ারি আমীর খসরুর জামিন নামঞ্জুর হয়। এরপর গত ৬ ফেব্রুয়ারি তাদের পক্ষে দায়রা আদালতে জামিন আবেদন করেন আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ। ওইদিনই শুনানির জন্য ১৪ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।

এই মামলায় গত ৩ ডিসেম্বর হাইকোর্টে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। এরপর ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এক সপ্তাহের এ রুল জারি করেন। এরপর ১০ জানুয়ারি ফখরুলের জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল খারিজ করে দেন বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

গত ২৮ অক্টোবর সমাবেশকে ঘিরে ফখরুলের বিরুদ্ধে ১১টি এবং আমীর খসরুর বিরুদ্ধে ১০টি মামলা হয়। এই একটি মামলা ছাড়া বাকি সব মামলায় সিএমএম আদালত থেকে আগেই তারা জামিন পেয়েছেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গত ২৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গুলশানের বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ওই সময় ফখরুলের স্ত্রী রাহাত আরা বেগম জানান, গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল বাসায় এসে সিসি ক্যামেরার ডিভাইস নিয়ে যায়। তার ১০ মিনিট পর বাসায় গিয়ে মির্জা ফখরুলকে আটক করে গোয়েন্দা কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

ওইদিনই রাত ৮টার দিকে তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে গোয়েন্দা পুলিশ। অপরদিকে তার পক্ষে জামিন আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

অন্যদিকে গত ২৮ অক্টোবর সমাবেশের দিন পুলিশ কনস্টেবল আমিনুল পারভেজ হত্যা মামলায় ২ নভেম্বর আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর সমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।