বরেণ্য লেখক-গবেষক, শিশু-কিশোর আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব শহীদজায়া অধ্যাপক পান্না কায়সারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রী এ শোক জানান।

প্রধানমন্ত্রী মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

আজ শুক্রবার সকাল ১১টায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান পান্না কায়সার। তিনি একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক, লেখক এবং রাজনীতিবিদ শহীদুল্লাহ কায়সারের স্ত্রী এবং অভিনেত্রী শমী কায়সারের মা।

পান্না কায়সারের জন্ম ১৯৫০ সালের ২৫ মে, তার আরেক নাম সাইফুন্নাহার চৌধুরী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তর এই শহীদজায়া শিক্ষকতা করেছেন বেগম বদরুন্নেসা কলেজে। স্বাধীনতা সংগ্রামের উত্তাল সময়কালে শহীদুল্লাহ কায়সারের হাত ধরে শুরু করে তার প্রায় সাড়ে চার দশকের পথচলা আধুনিক সাহিত্যের সঙ্গে, বাঙালি সংস্কৃতি আর প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে।

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় শহীদুল্লা কায়সারকে তার বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় আলবদর বাহিনী। এরপর তিনি আর ফেরেননি। সেই থেকে পান্না কায়সার একা হাতে মানুষ করেছেন তার দুই সন্তান শমী কায়সার এবং অমিতাভ কায়সারকে।

সংসার জীবনে আবদ্ধ না থেকে পান্না কায়সার দায়িত্ব নেন লাখো-কোটি শিশু-কিশোরকে সোনার মানুষে পরিণত করার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় লালিত দেশের বৃহত্তম শিশু-কিশোর সংগঠন ‘খেলাঘর’র সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হন ১৯৭৩ সালে। ১৯৯২ সাল থেকে সংগঠনের সভাপতিমণ্ডলীর চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ছিলেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সভাপতিও।

১৯৯৬-২০০১ সালের জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন পান্না কায়সার। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণা, গল্প-উপন্যাস মিলিয়ে বেশ কয়েকটি সাড়া জাগানো গ্রন্থের রচয়িতা তিনি।

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় অবদান রাখায় ২০২১ সালের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।

পান্না কায়সার বাংলাদেশের মানুষের কাছে এক অনুপ্রেরণার বাতিঘর।