রাজধানীর পল্টনে অবস্থিত গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়ে প্রবেশের সময় পুলিশের বাধার মুখে পড়েছেন দলের সভাপতি নুরুল হক নুর। পরে তারা কলাপসিবল গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে আহত হয়েছেন নুরসহ অনেকেই। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত নুরকে কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতা শাকিলুজ্জামান। কার্যালয়ে প্রবেশের সময় নুরের পোশাক ছিঁড়ে যায়। ছেঁড়া গেঞ্জি পরেই সাংবাদিকদের সঙ্গে তাকে কথা বলতে দেখা যায়।

নুরের দাবি, কার্যালয়ে প্রবেশের সময় পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে। এতে তিনিসহ অনেকেই আহত হয়েছেন। তার পাঞ্জাবি ও গেঞ্জি ছিঁড়ে গেছে। এ ছাড়া দলের এক নারী নেত্রীর পোশাক ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে।

পুলিশের মতিঝিল বিভাগের ডিসি হায়াতুল ইসলাম খান আমাদের সময়কে বলেন, ‘দুই পক্ষ সারা দিন মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। সংঘর্ষ ও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ কার্যালয় নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।’

বিনা উসকানিতে হামলার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কাউকে লাঠিপেটা করা হয়নি। এখানে সাংবাদিকরা লাইভ করেছেন। লাঠিচার্জ করা হলে সেটা সবাই দেখত। আমরা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে এখানে অবস্থান নিয়েছি।’

কার্যালয়ে প্রবেশের পর আহত নুরুল হক নুর উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘গণঅধিকার পরিষদকে নিয়ে যে ষড়যন্ত্র করছে, সেটা আপনারা দেখেছেন। এই দল ভাঙনে সরকার যে ষড়যন্ত্র করেছে, আজকে প্রমাণিত। পুলিশের সহযোগিতায় এই জামান সাহেব (গণঅধিকার পরিষদের একাংশের যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাসার মালিক কর্নেল অব. মিয়া মশিউজ্জামান) আমাদের কার্যালয়ে তালা লাগিয়েছে, আমাদের নেতাকর্মীদের মারধর করেছে, আমাদের মেয়ে মানুষের কাপড় ছিঁড়েছে। একাত্তরের সেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মতো বস্ত্র হরণ করেছে। আমাদের জামা-কাপড় টেনে ছিঁড়ে ফেলেছে।’

পুলিশের হামলার অভিযোগ তুলে নুর বলেন, ‘আমাদের অনেক নেতাকর্মী পুলিশের লাঠিচার্জ ও মারধরে আহত। এখন তারা চিকিৎসা নেবে। একজন নেতাকর্মীকে যদি অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়, আমরা প্রত্যেকে স্বেচ্ছায় কারাবরণ করব। আপনারা দেখছেন, আমাদের একজন নারী সহকর্মী অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এর চেয়েও প্রতিকূল পরিস্থিতি আমরা এর আগেও মোকাবিলা করেছি। আজকের এই পরিস্থিতিতেও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের কাছে আমরা মাথা নত করব না।’

কার্যালয়ের বিষয়ে নুর বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে নিজস্ব কার্যালয় ক্রয় করার উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু চুক্তির শর্ত অনুযায়ী আরও ছয় মাস এই কার্যালয় ব্যবহার করার আইনগত ভিত্তি আমাদের আছে। তাই আমরা আরও ছয় মাস এই কার্যালয়ে থাকব। আমাদের প্রত্যেক নেতাকর্মী নিয়মিত কার্যালয়ে আসবে। আজকে ওই জামান সাহেব পুলিশের সহযোগিতায় তালা লাগিয়েছিল। আমরা তালা ভেঙে আমাদের কার্যালয়ে ঢুকেছি।’

এর আগে গণঅধিকার পরিষদের নেতা আবু হানিফ দাবি করেন, ‘আজ সকালে গণঅধিকার পরিষদের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামানের (রেজা কিবরিয়া অংশের যুগ্ম আহ্বায়ক) নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি দল পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে যায়। তখন তারা কার্যালয়ের তালা ভেঙে কলাপসিবল গেট লাগিয়ে দেয় এবং কার্যালয়ের ভেতর থেকে দলের নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয়সহ জরুরি কাগজপত্র নিয়ে যায়। সেই সময় তারা ঘটনাস্থলে থাকা দলের ২-৩ জন কর্মীর ফোনও কেড়ে নেন।’