ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের একটি নতুন উপহার দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁও পুরোনা বাণিজ্য মেলা মাঠে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাজধানীর সঙ্গে সারা বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের একটি নতুন উপহার আজকে আপনাদের জন্য দিয়ে যাচ্ছি। যেটি যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি নতুন মাইলফলক। আজ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কাওলার দক্ষিণ প্রান্ত থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন করা হয়েছে। আপনাদের জন্য এই উপহার দিচ্ছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই এক্সপ্রেসওয়ে বিশেষ করে এয়ারপোর্ট, কুড়িল বিশ্বরোড, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, ফার্মগেট, মগবাজার, কমলাপুর এলাকার যানজট নিরসন করবে। এটি ঢাকার যানজট নিরসনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত উন্নতি হবে। মানুষের কর্মঘণ্টা নষ্ট হবে না।’

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘৯৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত যারা ক্ষমতায় ছিল তারা দেশকে কিছুই দিতে পারেনি। নিজেদের আখের গুছিয়েছে। এদেশের মানুষের জন্য অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার সুযোগ তারা দিতে পারেনি। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য তারা গড়তে চায়নি। স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মমর্যাদা নিয়ে বিশ্ব দরবারে দাঁড়াবে বাংলাদেশ, এটা কখনো তারা চায়নি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২১ বছর পর ক্ষমতায় আসি আমরা, এরপর জনগণের সেবা করতে শুরু করি। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য কীভাবে পরিবর্তন করব সেই কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম মাত্র পাঁচ বছর। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট, সবকিছু আমরা উন্নত করেছিলাম। এরপর আবার চক্রান্ত, ২০০১ থেকে ২০০৮। ২৯টা বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, কী দিয়েছে বাংলাদেশের মানুষকে তারা। কিছু দিতে পারেনি। তারা শুধু নিজেরা লুট করেছে, আখের গুছিয়েছে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সেতু সচিব মো. মনজুর হোসেন প্রমুখ।

এর আগে আজ বিকেল ৩টা ৪২ মিনিটে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাওলা থেকে তেঁজগাওয়ের ফার্মগেট অংশের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথম যাত্রী হিসেবে তিনি ৮০ টাকা টোল দিয়ে কাওলা প্রান্ত থেকে ফার্মগেটে এসেছেন। ফার্মগেটে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নেমে তিনি পুরোনা বাণিজ্যমেলা মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশে যান।

রাজধানীর যানজট নিরসনে অনেক বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার, যার একটি হচ্ছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। ইতোমধ্যে মেট্রোরেলের মতো প্রকল্পের সুবিধা পেতে শুরু করেছে নগরবাসী। এর ধারাবাহিকতায় আরেকটি মেগাপ্রকল্পের উদ্বোধন করা হচ্ছে।

আপাতত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দরের দিক থেকে ওঠা গাড়ি নামবে ফার্মগেটের ইন্দিরা রোড দিয়ে। আর ফার্মগেট প্রান্ত থেকে গাড়ি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠবে বিজয় সরণি ফ্লাইওভার দিয়ে।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি চলবে ৬০ কিলোমিটার গতিতে। বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে ১২ মিনিট। এই সড়কের কানেকটিভিটি মোট সাড়ে ২২ কিলোমিটার। এর মধ্যে সাড়ে ১১ কিলোমিটার মেইন ক্যারেজ, অর্থাৎ উড়াল সড়ক। সময় সাশ্রয় ও বাধাবিহীন যাতায়াতে সড়কটি বড় ভূমিকা রাখবে।