কাগজ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি। অন্যদিকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দিওয়ার জন্য ডিসেম্বরের মধ্যেই পাঠ্যবই চেয়েছেন প্রকাশকদের কাছে। শনিবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে কাজী বশির মিলনায়তনে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির ৪১তম সাধারণ সভায় সমিতির পক্ষে প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় এ বিষয়টি উঠে আসে। এদিন বার্ষিক সাধারণ সভা ও বইমেলা উদ্বোধন করেন ডা. দীপু মনি। তিনি বই মেলার দুটি স্টল ঘুরে দেখেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি মো. আরিফ হোসেন ছোটন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি কায়সার-ই-আলম, শ্যামল পাল, মির্জা আলী আশরাফ কাশেম, ইঞ্জিনিয়ার মেহেদী হাসান, মাজহারুল ইসলাম ও সাবেক সভাপতি আলমগীর সিকদার লোটন। প্রকাশনা শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি ও ভাবনা তুলে ধরেন শ্যামল পাল।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যা কিছু ভালো, তা আমরা সন্তানদের জন্য তুলে রাখি। সন্তানদের শিক্ষার বিষয়টি যেখানে জড়িত, সেখানে কোনো কিছুর সঙ্গে আপস করার প্রশ্নই উঠে না। নতুন বছরে বই আমাদের লাগবেই। এবং তা ১ তারিখেই লাগবে। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তারা আমাদেরকে সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। আশ্বাস দিয়েও যদি তারা কথা না রাখেন, তবে বাধ্য হয়েই আমাদেরকে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির (বাপুস) সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটন বলেন, ‘দুঃখের কথা বলার জন্য আমরা কারও কাছে যেতে পারি না। আমাদের কিছু পুস্তক প্রকাশনা আছে, যারা ডোনেশনের মাধ্যমে এই শিল্পকে ধ্বংস করতে চায়। আমরা আপনার সহায়তায় এসব প্রকাশনীকে কালো তালিকাভুক্ত করতে চাই।’

সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘কাগজের সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ৫০ ভাগ কাগজ শুল্কমুক্ত আমদানি না করলে ১ জানুয়ারি বই উৎসবে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া সম্ভব নয়।’ এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি।

সভায় ১৩টি সুপারিশ তুলে ধরেন পুস্তক প্রকাশনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। সুপারিশগুলো হলো—প্রকাশনা শিল্পকে আরও গতিশীল করতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে মতবিনিময়। পাঠ্য মাধ্যমকে জনগণের জন্য সহজলভ্য করা। এনসিটিবি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটিগুলোতে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি থেকে কমপক্ষে দুজন সদস্য অন্তর্ভুক্তকরণ। বিদেশি লেখার বঙ্গানুবাদ এবং বাছাইকৃত দেশি লেখার ইংরেজি অনুবাদের ক্ষেত্রকে উৎসাহ দেওয়া। শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে গ্রন্থগার গড়ে তোলা প্রভৃতি।

বার্ষিক সাধারণ সভায় সমিতির পরিচালক এবং ৬৪ জেলা ও উপজেলার পুস্তক ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

রাকিব/এখন সময়