সরকারের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বুধবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দৈনন্দির ভোগ্যপণ্য পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ভোটারবিহীন অবৈধ সরকারের কিছু সুবিধাভোগী দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী চক্রের হাতে দৈনন্দিন ভোগ্যপণ্যের বাজার ব্যবস্থাপনা জিম্মি হয়ে আছে। মূল্যবৃদ্ধির এই দুর্নীতিবাজ চক্রের শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে সরকারের চালিকা শক্তিরাই। সরিষায় ভূত থাকলে ভূত তাড়াবে কে? রক্ষক যখন ভক্ষক হয় তখন যা হরার তাই হচ্ছে বাংলাদেশে।

মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুর্নীতির কারণেই দ্রব্যমূল্য বাড়ছে, তাদের দুর্নীতির কারণেই আজকে সারা দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্যের পাগলা ঘোড়ার দাপটে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও হতদরিদ্ররা পিষ্ট হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সরকারের দুর্নীতি, টোটাল ফেলিউর, অব্যবস্থাপনার কারণে আজকে এই অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, যেখানে সরকারের বিনিয়োগ করার প্রয়োজন নেই সরকার সেখানে টাকা দিচ্ছে। ১০ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু ৩০ হাজার কোটি টাকার উপরে নিয়ে গেল। এয়ারপোর্টের রাস্তার সমস্যা- এখানে প্রতি কিলোমিটারে ২৩০ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। অথচ কি অবস্থা? ১০ বছরে এখন পর্যন্ত এই অবস্থায়ই পড়ে আছে। অর্থাৎ এসবের মূল কারণটাই হচ্ছে দুর্নীতি।

জ্বালানি প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, তেলের বেলায় কি দুর্নীতি করেছে, বিপিসি একইভাবে দুর্নীতি করেছে, বিদ্যুতের বেলা দেখেছেন, তারা হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। সেই কারণে আজকে এই দুর্নীতি হচ্ছে। হয়ত বিশ্ব বাজারের কারণে সহনীয় পর্যায় কিছু হতে পারত। কিন্তু এখন যেটা হচ্ছে সেটা সম্পূর্ণভাবে দুর্নীতির কারণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯৭৪ সালে তারা এভাবে দুর্নীতি করেছে, আজকেও একইভাবে তারা দুর্নীতি করছে।

এই অবস্থার পরিবর্তনে ‘রাজপথে’ আন্দোলন’ সংগঠিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই দুর্নীতিবাজ সরকারের জনগণের কাছে কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তারা জনগণের কল্যাণের তোয়াক্কা না করে নিদারুণভাবে নিষ্ঠুর ও নির্দয় হয়ে পড়েছে। আসুন ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করি।

দেশের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যেমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও মূল্যস্ফীতির তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারি হিসেবেই গত জুন মাসের মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৫৬% যা গত ৯ বছরে সর্বোচ্চ রেকর্ড। বর্তমানে মানুষের ক্রয় ক্ষমতাও অনেক কমে গেছে। নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের মানুষ নানাভাবে ব্যয় কমিয়ে টিকিয়ে থাকার চেষ্টা করছেন। নিজের আয় দিয়ে আর চলতে না পারায় স্ত্রীকে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে অনেকেই ফ্যামিলি বাসা ছেড়ে উঠেছেন মেসে। মানুষ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে রীতিমত হিমশি খাচ্ছে।

রাকিব/এখন সময়