মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের ৩৭৫ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি। তবে এই পূর্ণাঙ্গ কমিটিকে ‘প্রহসন’ ঘোষণা দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস অবরোধের ডাক দিয়েছেন পদবঞ্চিত বেশ কিছু নেতাকর্মী। ফলে এই অবরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস-পরীক্ষা, শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বাস ও শাটল ট্রেনের সার্ভিস বন্ধ ছিল। রবিবার (৩১ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি।

এর পর রাত ১টার দিকে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসের বেশ কয়েকটি হলে ভাঙচুর করে। ভোর রাতের দিকে তারা ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্ট এলাকার মূল ফটক বন্ধ করে দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন। সোমবার (১ আগস্ট) বিকেল ৩টায় জিরো পয়েন্ট এলাকায় অবরোধ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেওয়া পদবঞ্চিত ও আশানুরূপ পদ না পাওয়া নেতাকর্মীরা এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আন্দোলনরত ছাত্রলীগ কর্মী মো. দেলোয়ার হোসেন। এ সময় তিনি দাবি করেন, বিবাহিত, অছাত্র, জামাত-শিবির ব্যাকগ্রাউন্ড কর্মীদের বিভিন্ন অপরাধীদের দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ সময় তিনি অবরোধ কর্মসূচির ঘোষাণা দেন।

পদবঞ্চিতরা পূর্ণাজ্ঞ কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদপ্রাপ্ত মো. ইলিয়াসের বিরুদ্ধে অছাত্র, ইয়াবা ব্যবসায়ী ও টেন্ডার বাজির অভিযোগ এনে তাকে আজীবন বহিষ্কারের দাবি জানান। একই সঙ্গে সকল অছাত্র, শিবির, বিএনপি-জামাত ও বিবাহিত কর্মীদের বাদ দিয়ে আজকের মধ্যে ত্যাগীদের অন্তর্ভূক্ত করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবি জানায় পদপঞ্চিতরা। পদবীতে সিনিয়র জুনিয়র ক্রম ঠিক করতে হবে বলেও জানান তারা। অন্যদিকে পদবঞ্চিতের অবরোধের মধ্যেই শাটল ট্রেনের চালককে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে দুর্বৃওদের বিরুদ্ধে। তবে এ ব্যাপারে আন্দোলনকারীরা বলছেন, তাদের এই আন্দোলন ও অবরোধ কর্মসূচিকে বেগবান করতে এবং ক্যাম্পাস অচল করে দিতেই ছাত্রলীগ কর্মীরা এই অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছে।

এ ব্যাপারে ষোলশহর স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার তন্ময় চৌধুরী বলেন, সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শাটল ট্রেনের চালক আবু তাহেরকে ট্রেন থেকে নামিয়ে অপহরণ করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। কারা নিয়েছে সেটি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ট্রেনের হোসপাইপও কেটে দেওয়ায় কোনো শাটল ট্রেন শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারেনি। কমিটি দেওয়াকে কেন্দ্র করে চবি ছাত্রলীগের এবারের এই আন্দোলন-অবরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকগুলো বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য নির্ধারিত শাটল ট্রেন এবং বাস সার্ভিস। ফলে ক্লাস, পরীক্ষা নিয়ে শঙ্কায় আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

রাকিব/এখন সময়