ইয়েমেনের সেনা ও স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী সৌদি আরবের জেদ্দায় আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর দিশেহারা ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছে রিয়াদ। এখন তারা ইয়েমেনের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের মোকাবেলায় নিজেদের দুর্বলতা ঢাকার জন্য নানা কূটকৌশল অবলম্বন করেছে।
ইয়েমেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার জেদ্দার কিং আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লক্ষ্য করে বোরকান-১ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার কথা জানায়। ইয়েমেনের সেনা মুখপাত্র শারাফ গালিব লোকমানও বলেছেন, তারা অত্যন্ত সফলভাবে জেদ্দা বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
সৌদি সূত্র জানিয়েছে, সেদেশের সরকার জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য পাল্টা ইয়েমেনের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের কৌশল বেছে নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে তারা মুসলমানদের ধর্মীয় স্থাপনাগুলোকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। সৌদি কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, ইয়েমেনের বিপ্লবী যোদ্ধারা পবিত্র মক্কার দিকে লক্ষ্য করে ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। সৌদি গণমাধ্যমগুলোও ইয়েমেনের যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে, সৌদি আরবের বর্বরোচিত আগ্রাসনের জবাবে ইয়েমেনের সেনা ও স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী শুধুমাত্র সৌদি আরবের সামরিক ঘাঁটিগুলোতে হামলা চালাচ্ছে। অথচ সৌদি কর্মকর্তারা ইয়েমেনি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের পবিত্র স্থাপনার ওপর হামলার মিথ্যা ও হাস্যকর অভিযোগ তুলছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইয়েমেনের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের কাছে একের পর এক পরাজয়ের পর সেই ক্ষতি ও ব্যর্থতা পুষিয়ে নেয়ার এবং নিজ রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য সৌদি আরব মুসলমানদের পবিত্র স্থাপনাগুলোকে টার্গেট করেছে। সৌদি আরবের নেতৃত্বে আরব সামরিক জোট গত প্রায় ১৯ মাস ধরে ইয়েমেনে সামরিক ও রাজনৈতিক বিজয় অর্জনের জন্য সেদেশের জনগণের বিরুদ্ধে নৃশংস হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এমন কোনো অপরাধযজ্ঞ নেই যা তারা করছে না।
সৌদি আরব ইয়েমেনের ইমানদার ও ধার্মীক প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বদনাম করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে শিশুসুলভ ধর্মীয় পবিত্র স্থাপনায় হামলার চেষ্টার অভিযোগ তুলেছে অথচ সৌদি সরকার এ বছর ইয়েমেনিদেরকে হজ করার অনুমতি দেয়নি। সৌদি সরকার মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির যে চেষ্টা চালাচ্ছে এর মাধ্যমে তারা প্রকৃতপক্ষে ইসরাইল ও আমেরিকার সেবায় নিয়োজিত রয়েছে।
ইয়েমেনের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের দমনের জন্য সৌদি আরব সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আলে সৌদ সরকার নিজ দেশের স্বার্থ রক্ষায় জনগণর ওপর ভরসা না করে বরং মুসলিম বিশ্বের অভিন্ন শত্রু অর্থাৎ দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও সহযোগিতা বজায় রেখে চলেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সৌদি নেতৃত্বে সামরিক জোট গত ১৯ মাস ধরে ইয়েমেনে হামলা চালিয়েও লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমানে ইয়েমেনের পক্ষ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা পর সৌদি কর্তৃপক্ষ কার্যত দিশেহারা পড়েছে এবং তারা ইয়েমেনের চোরাবালিতে আটকা পড়েছে।