সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার প্রশ্নে রাশিয়ার প্রতি চীনের সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
বুধবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার সময় এ প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে চীনের সংবাদমাধ্যম সিসিটিভি। সিসিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, টেলিফোন সংলাপে পুতিন জিনপিংকে বলেন, নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের মতো মৌলিক ইস্যুতে রাশিয়ার প্রতি চীনের সমর্থন অব্যাহত থাকবে। এছাড়া দুই দেশের কৌশলগত সমন্বয় আরও জোরদার করা এবং জাতিসংঘ, ব্রিকস ও সাংহাই কো-অপারেশেন অর্গানাইজেশনের মত আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থাগুলোতে রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় বাড়াতে চীন আগ্রহী।

বুধবার ছিল শি জিনপিংয়ের ৬৯তম জন্মদিন। ভ্লাদিমির পুতিন তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে পৃথক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ফোনালাপে পুতিন বলেছেন, চীন ও রাশিয়ার বন্ধুত্ব এখন অভূতপূর্ব উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং দিন দিন এই সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন, মস্কো বরাবরই জিনজিয়াং, হংকং এবং তাইওয়ানসহ চীনের বিভিন্ন্ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের বিভিন্ন শক্তির নাক গলানো ও অনধিকার চর্চার বিরোধী।

ইউক্রেনে চলমান রুশ সামরিক অভিযান নিয়েও ফোনে কথা হয়েছে দুই নেতার মধ্যে। জিনপিং জানিয়েছেন, ইউক্রেন ইস্যুতে চীন বরাবরই স্বাধীনভাবে মত দিয়ে এসেছে এবং শুরু থেকে এখন পর্যন্ত চীন চায়, এই দ্বন্দ্বের সঙ্গে যুক্ত পক্ষগুলো যেন নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সংকটের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান বের করে। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণা দেওয়ার দু’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।

যুদ্ধের শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা রুশ সেনাদের অভিযানকে ‘আগ্রাসন’ হিসেবে উল্লেখ করলেও চীন এই শব্দ ব্যাবহারের পক্ষপাতী নয় বলে জানিয়েছিল দেশটির সরকার। পাশাপাশি, সরাসরি রাশিয়ার পক্ষে কথা না বললেও এখন পর্যন্ত দেশটির ওপর কোনো প্রকার নিষেধাজ্ঞাও দেয়নি চীন। তবে চীনের সরকার বলেছে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার দ্বন্দ্ব শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব। যুদ্ধ শুরুর পর এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ফোনালাপ হলো জিনপিং ও পুতিনের মধ্যে।