তিন মাসের বেশি সময় হতে চলল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামার নামগন্ধ নেই। উল্টে তা আরো প্রবল আকার নিতে চলেছে। আমেরিকার সভাপতিত্বে ইউক্রেনের সমর্থক দেশগুলো সম্প্রতি নিজেদের মধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠকে মিলিত হয়েছিল। তাতে আরো ২০টি দেশ ইউক্রেনকে অস্ত্রশস্ত্র, গোলা-বারুদ দেয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেখিয়েছে। ফলে, প্রাণঘাতী যুদ্ধ থামার আপাতত কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

সোমবার ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানো অন্তত ৪৮টি দেশ এবং সংগঠন ভার্চুয়াল মাধ্যমে মিলিত হয়েছিল। পরিভাষায় এই জোটের নাম ‘ইউক্রেন ডিফেন্স কন্ট্যাক্ট গ্রুপ’। সেখানেই ২০টি দেশ মস্কোর বিরুদ্ধে লড়তে কিভকে অস্ত্রশস্ত্র, গোলা-বারুদ সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

বৈঠকের শুরুতেই বর্তমান পরিস্থিতির ব্যাখ্যা করেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেক্সি রেজনিকভ। তিনি তিন মাস ধরে চলা যুদ্ধের বিশ্লেষণ করে ইউক্রেনের বর্তমান সামরিক অবস্থা সম্পর্কে সকলকে অবহিত করেন।

ইতোমধ্যেই ইউক্রেনের পূর্ব এবং দক্ষিণ দিকে নিজেদের কব্জা প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে রাশিয়া। কিন্তু এখনো দুর্ভেদ্য রাজধানী কিভ। এই পরিস্থিতিতে লড়াইয়ের ঝাঁঝ আরো বাড়াতে একগুচ্ছ অস্ত্র-প্রতিশ্রুতি দেয়া হলো ভলোদিমির জেলেনস্কির দেশকে।

আমেরিকার প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন বলেন, অন্তত ২০টি দেশ এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনকে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলা-বারুদ সরবরাহ করার প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়াও আরো সহায়তার বার্তা দেয়া হয়েছে রেজনিকভকে।

তিনি আরো বলেন, রেজনিকভের সাথে আলোচনার পর আমরা ইউক্রেনের অগ্রাধিকার সম্বন্ধে আরো নিশ্চিত হতে পেরেছি। পাশাপাশি যুদ্ধক্ষেত্রের অবস্থা সম্পর্কেও আমাদের অবহিত করেছেন রেজনিকভ। ২০টি দেশে সাহায্যের প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি আরো বহু দেশ ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে সামরিক প্রশিক্ষণ দিতেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

অস্টিনের বক্তব্য থেকে জানা যাচ্ছে, ডেনমার্ক ইউক্রেনকে একটি ‘হারপুন’ জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। চেক রিপাবলিক কিভকে বিশেষ হেলিকপ্টার, ট্যাঙ্ক এবং রকেট ব্যবস্থা দিয়ে সাহায্য করতে চায়। আমেরিকা নতুন করে আরো চার হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র পাঠাচ্ছে ইউক্রেনে। যদিও সেই অস্ত্র সাহায্যের মধ্যে কী কী অস্ত্রশস্ত্র আছে তা এখনো স্পষ্ট নয়।

তবে যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে যুদ্ধ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তার মধ্যে অত্যাধুনিক রকেট ব্যবস্থা থাকতে পারে। কারণ সম্প্রতি দূরপাল্লার রকেট ব্যবস্থা চেয়ে আমেরিকার কাছে দরবার করেছিল ইউক্রেন।
সূত্র : আনন্দবাজার