কুমিল্লার চান্দিনায় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদের গুলিতে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ঘটনায় রেদোয়ান আহমেদকে আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার (৯ মে) দুপুর আড়াইটায় চান্দিনা উপজেলা সদরের রেদোয়ান আহমেদ কলেজ ক্যাম্পাস-২ মমতাজ আহমেদ ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপর রেদোয়ান আহমেদ থানায় আশ্রয় নিলে উত্তেজিত ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা চান্দিনা থানার প্রধান ফটক ঘেরাও করে।

আহতরা হলেন চান্দিনা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা রূপনগর এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছেলে মাহমুদুল হাসান জনি সরকার (২২)। জনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। অপরজন হলেন চান্দিয়ারা গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে নাজমুল হোসেন নাঈম (২৮)। তিনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সামিরুল খন্দকার রবি জানান, চান্দিনা রেদোয়ান আহমেদ কলেজ ছাত্রলীগ ঈদের পূর্ব থেকে আজ (৯ মে) ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেয়। এরই মধ্যে পৌর এলডিপিও একই দিন একই স্থানে ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজন করে। সোমবার দুপুর থেকে ছাত্রলীগের আয়োজনে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা মমতাজ আহমেদ ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করে। দুপুর আড়াইটার দিকে রেদোয়ান আহমেদ গাড়ি নিয়ে ওই ক্যাম্পাসের সামনে এসে গাড়ি থেকে দুটি গুলি করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে থানায় গিয়ে আশ্রয় নেন। রেদোয়ান আহমেদের গুলিতে জনি ও নাজমুল গুলিবিদ্ধ হন। তাদেরকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কাজী আখলাকুর রহমান জুয়েল বলেন, ‘রেদোয়ান আহমেদ রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার করতে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অমানবিকভাবে গুলি চালিয়েছে। ‘

সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. রেদোয়ান আহমেদ বলেন, ‘আমাদের পূর্বনির্ধারিত প্রগ্রাম ছিল। আমাকে প্রধান অতিথি করে চিঠির মাধ্যমে পৌর এলডিপি কার্যক্রম পরিচালনা করে। এরই মধ্যে আমাদের প্রধান ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগকে প্রগ্রাম করার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। আমরা ক্যাম্পাস-২ মমতাজ আহমেদ ভবনে পূর্বনির্ধারিত প্রগ্রাম করার কথা। দুপুরে আমি ক্যাম্পাস-২-এর সামনে গেলে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের লোকজন আমার গাড়িতে হামলা করে। আমি আত্মরক্ষার্থে আমার লাইসেন্স করা শটগান দিয়ে গুলি চালাই। কার গায়ে গুলি লেগেছে আমি বলতে পারব না। পরে আমি থানায় এসে আশ্রয় নিই। ‘

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দাউদকান্দি সার্কেল) মো. ফয়েজ ইকবাল বলেন, ‘পাবলিক রোষানলে পড়ে রেদোয়ান আহমেদ থানায় আশ্রয় নিতে এলে আমরা তাকে আটক করি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে। ‘

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকেল সাড়ে ৩টা) উপজেলা সদরসহ থানা এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।