সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রের চেয়ে ছাত্রীর সংখ্যা বেশি। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) সর্বশেষ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। ২০২৩ সালের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে করা প্রতিবেদনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রদের চেয়ে ১ লাখ ৭ হাজার ছাত্রী বেশি।

তবে শিক্ষার্থী পর্যায়ে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে গেলেও এখনো শিক্ষকতায় নারীর সংখ্যা কম বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। দেশে শিক্ষকদের সিংহভাগই পুরুষ। মোট শিক্ষকের মধ্যে মাত্র ২৮ শতাংশ নারী। বাকি প্রায় ৭২ শতাংশই পুরুষ।

বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) করা ‘বাংলাদেশ শিক্ষা পরিসংখ্যান-২০২৩’-এর খসড়া প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে ব্যানবেইসে অডিটরিয়ামে আয়োজিত কর্মশালায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়। এরপর এটি চূড়ান্ত আকারে প্রকাশ করবে প্রতিষ্ঠানটি। কর্মশালায় এ তথ্য তুলে ধরেন ব্যানবেইসের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রধান শেখ মো. আলমগীর। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে মাধ্যমিক পর্যায় থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ কোটি ২ লাখ ৯৬ হাজার ৬৯৫ জন। এরমধ্যে ছাত্রী ৫২ লাখ ১ হাজার ৮৯০ এবং ছাত্র ৫০ লাখ ৯৪ হাজার ৮০৫ জন।

অর্থাৎ, ছেলেদের চেয়ে ১ লাখ ৭ হাজার ৮৫ জন বেশি মেয়ে শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। আর শতাংশের হিসাবে ছাত্রীর হার ৫০ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং ছাত্র ৪৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

এদিকে, সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী পর্যায়ে গত কয়েক বছর ধরে ছাত্রীদের আধিপত্য দেখা গেলেও শিক্ষকতায় নারীরা এখনো বেশ পিছিয়ে। ব্যানবেইসের তথ্য বলছে, ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশে মোট শিক্ষক সংখ্যা ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৩৯ জন।

যার মধ্যে নারী শিক্ষক মাত্র ১ লাখ ৮২ হাজার ২৮৮ জন। বাকি ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৫১ জনই পুরুষ। মোট শিক্ষকের মধ্যে ৭১ দশমিক ৭৮ শতাংশ পুরুষ এবং ২৮ দশমিক ২২ শতাংশ নারী।

ব্যানবেইসের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, দেশে বর্তমানে মাধ্যমিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪৫ হাজার ৬২৬টি। এরমধ্যে ২ হাজার ৬৩৮টি প্রতিষ্ঠান সরকারি এবং বেসরকারি ৪২ হাজার ৯৮৮টি। অর্থাৎ, দেশে সরকারির চেয়েও ১৬ গুণ বেশি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

এ বিষয়ে ব্যানবেইসের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রধান শেখ মো. আলমগীর বলেন, ‘আমরা তথ্য সংগ্রহ করেছি এবং তা দিয়ে প্রতিবেদন করেছি। শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার কারণ, ছাত্রদের পিছিয়ে পড়া কিংবা নারীদের শিক্ষকতায় এখনো সেভাবে সরব উপস্থিতি না থাকার বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্টরা এবং শিক্ষাবিদরা তুলে আনবেন।’

তিনি বলেন, ‘ঠিক কী কারণে এটা হচ্ছে, সেই ব্যাখ্যা প্রাথমিকভাবে আমরা দিতে পারবো না। আমাদের দেওয়ারও কথা নয়। পরিসংখ্যানটা আমরা তুলে এনেছি। এখন আমাদের প্রতিবেদনের এ তথ্য ধরে সংশ্লিষ্টদের কাজ করার সুযোগ তৈরি হবে।’