ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুর্নীতির মহাকাব্য হাজার পাতা ছাড়িয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‌‘কত হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হলে আওয়ামী পরিভাষায় দুর্নীতি হিসেবে গণ্য হবে?’

আজ বুধবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ প্রশ্ন রাখেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব গতকাল বলেছেন দুর্নীতি সারা বিশ্বেই আছে, শুধু বাংলাদেশকে অপবাদ দেওয়া হয়। তার এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বলতে চাই-দুর্নীতি হয়তো সারা বিশ্বেই কমবেশি থাকতে পারে, কিন্তু বিশ্বব্যাপী আওয়ামী মার্কা দুর্নীতির কলঙ্ক তীলক আর কোথাও আছে বলে জানা নেই।’

তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনাদের মন্ত্রীর দুর্নীতি করা টাকা ফেরত দিতে হয়। যে দেশে একটা বালিশের দাম ২৭ হাজার, বালিশের কাভারের দাম ২৮ হাজার, পর্দার দাম ৩৩ হাজার টাকা। করোনাকালে চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়ে সবচেয়ে বেশী দুর্নীতি হয়েছে। রেল বিভাগে টাকা বিনিময় বাণিজ্যের কথা সবার নিশ্চয়ই স্মরণে আছে। গভীর রাতে মন্ত্রীর এপিএস’র বাসায় ৭০ লাখ টাকার স্তুপের কথা অর্থাৎ কালো বিড়ালের কথা কেউ ভুলে যায়নি। দুর্নীতির এ রকম লঙ্কাকাণ্ড পৃথিবীর কোথাও ঘটে না।’

আওয়ামী সরকার কয়েকবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম মুহিত সাহেব বলেছিলেন চার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি কিছুই না। এখন ওবায়দুল কাদের সাহেবের কাছে আমার প্রশ্ন কত হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করলে সেটিকে আওয়ামী পরিভাষায় দুর্নীতি হিসেবে গণ্য করা হবে? ওবায়দুল কাদেরের কথায় মনে হচ্ছে যে, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দুর্নীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন টিআইবি বলছে এই দুর্নীতি বর্তমানে আরও অবনতিশীল হয়েছে। আর এজন্যই টিআইবিকে বিএনপির দালাল বলা হচ্ছে। বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাগারে, এরা কি কারণে কারাবন্দী সেই কথাটি সাবলিলভাবে ফাঁস করেছেন সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। এখন ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনি কখন ড. আব্দুর রাজ্জাককে বিএনপির দালাল বলবেন সেটির জন্য জাতি অপেক্ষা করছে। দখলদার আওয়ামী সরকার শীর্ষ পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত দুর্নীতিকে ছড়িয়ে দিয়েছেন।’

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি। উপজেলা নির্বাচনেও আমাদের আগের এই সিদ্ধান্ত বহাল আছে।’

সংবাদ সম্মেলনে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে কালো পতাকা মিছিল থেকে শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান রিজভী। একই সঙ্গে অবিলম্বে গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান তিনি।