রাজধানীর পল্টন থানায় নাশকতার অভিযোগে করা একটি মামলায় জামিন পেলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ছাড়া নাশকতাসহ দুই মামলায় জামিন পেয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর।

আজ বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হক ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় নাশকতার মামলায় তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। একই আদালত পিটিয়ে পুলিশ হত্যার অভিযোগে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে পল্টন থানায় হওয়া মামলায়ও জামিন মঞ্জুর করেছেন।

এ নিয়ে মির্জা ফখরুলের ১০ মামলায় জামিন মঞ্জুর হলো। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় তিনি জামিন পেলেই তিনি কারামুক্ত হতে পারবেন। এর আগে গত ১০ জানুয়ারি ৯ মামলায় জামিন মঞ্জুর করেন সিএমএম আদালত। একইদিন জামিন বাকি থাকায় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় জামিন নামঞ্জুর করেের আদেশ দেন।

গত ১৮ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, পল্টন মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমিত কুমার আসামিদের গ্রেপ্তার দেখানোসহ ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।

মামলায় বলা হয়, গত ২৮ অক্টোবর এজাহারনামীয় ও তাদের সহযোগী আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বেআইনি জনতাবদ্ধে দাঙ্গা-হাঙ্গামা করতে বাঁশের লাঠি নিয়ে সজ্জিত হয়ে পুলিশকে আক্রমণ, বলপ্রয়োগ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গুরুতর জখম করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ ব্যক্তি ও সম্পত্তির ক্ষতি করেন।

এতে বলা হয়, আসামিরা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা। তারা ঘটনার দিন নাশকতা ও অরাজক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য প্রকাশ্যে বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে এজাহারনামীয় ও পলাতক আসামিরা পল্টন মডেল থানার সামনে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ এবং ককটেল বিস্ফোরণ করে পুলিশ সদস্যদের গুরুতর আহত করেন।

উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ ছিল। মহাসমাবেশ শুরুর আগেই কাকরাইলে দুপুর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষ পরে বিজয়নগর পানির ট্যাংক ও শান্তিনগর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বিকেল তিনটার দিকে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়।

বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে পুলিশের এক সদস্য ও যুবদলের ওয়ার্ড পর্যায়ের এক নেতা নিহত হন। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন পুলিশের ৪১ ও আনসারের ২৫ সদস্য। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন সাংবাদিক। সংঘর্ষে হাজারের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি বিএনপির।

ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে মির্জা ফখরুল ১১ মামলার আসামি। যার মধ্যে ৯ মামলায় গত ১০ জানুয়ারি জামিন মঞ্জুর করে সিএমএম আদালত। একইদিন প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে হাইকোর্ট।

গত ২৮ অক্টোবর মির্জা ফখরুলের গুলশানের নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এরপর প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুরের অভিযোগের মামলায় তাকে আদালতে হাজির করা হলে গত ২৯ অক্টোবর আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। এরপর থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারাগারে রয়েছে।

অন্যদিকে, গত ২ নভেম্বর রাত ১টার দিকে গুলশানের একটি বাসা থেকে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আটক করে ডিবি। পরদিন ৩ নভেম্বর সমাবেশ চলাকালীন সংঘর্ষে পুলিশ সদস্য নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মামলায় তার ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ৯ নভেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।