প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, কেউ যদি মনে করেন, ভোটে কারচুপি হয়েছে, ফলাফল প্রভাবিত হয়েছে; তাহলে তার জন্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্টে বিভাগ উন্মুক্ত থাকবে। গেজেট প্রকাশ প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে নালিশ দায়ের করতে পারবেন।

আজ সোমবার (৮ জানুয়ারি) বিকালে নির্বাচনোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এসে ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল, ভোটের হার ও অভিযোগসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন সিইসি।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দিনে অনিয়ম নিয়ে যেসব অভিযোগ এসেছে, সেগুলো পর্যালোচনা করে খতিয়ে দেখার মতো প্রয়োজনীয়তা থাকলে আমলে নেওয়া হবে।’

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯ আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় রোববার। নওগাঁ-২ আসনের একজন প্রার্থীর মৃত্যুতে সেখানে পরে হবে। তবে, গতকাল নির্বাচন কমিশন থেকে ২৯৮ আসনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। আর ময়মনসিংহ-৩ আসনের একটি কেন্দ্রের ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের কারণে ওই আসনের ফলাফল ঘোষণা স্থগিত রাখা হয়েছে। কারণ, ওই একটি কেন্দ্রের ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে, কোন প্রার্থী জয়ী হবেন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ময়মনসিংহ-৩ আসনের ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে। এ আসনে ৫৩ হাজার ১৯৬ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন একজন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ৫২ হাজার ২১১ ভোট পান। ভোটের ব্যবধান ৯৮৫। স্থগিত কেন্দ্রে ভোট রয়েছে তিন হাজার ৯৩২টি। ফলে, ওই একটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ করা হবে ১৩ জানুয়ারি।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচনটা সমাপ্ত হয়েছে। বিভিন্ন রকম ধারণা ছিল, পক্ষে বিপক্ষে ক্যাম্পেইন ছিল। একটি গুরুত্বপূর্ণ ও তাদের সমমনা দলগুলো নির্বাচন বর্জন করেছে, জনগণকেও ‍উদ্বুদ্ধ করেছে ভোটাধিকার প্রয়োগ না করার জন্য। সেটি একটি বিবেচ্য বিষয় ছিল। আমরা খুশি হতাম, যদি সব দল নির্বাচনে অংশ নিয়ে এটার সার্বজনীনতা আরও বিস্তৃত হতো, নির্বাচনটা আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর হতো। কিন্তু দু্‌র্ভাগ্যজনক, সেটা শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি।

ভোটের দিনে নানা অভিযোগ এসেছে ইসিতে। এসব অভিযোগ কতটুকু আমলে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, রিটার্নিং অফিসার যে রেজাল্ট দেন, সেটিই চূড়ান্ত। এরপর ইসি যদি সঙ্গত মনে করে তাহলে অনেকক্ষেত্রে গুরুতর অভিযোগ থাকলে বিবেচনা করা হতে পারে। ইসিকে কতগুলো অভিযোগ জমা পড়েছে তা নিয়েও কমিশন বসবে শিগগির। কী কী অভিযোগ এসেছে তা নিয়ে কমিশন বসবে। বসেই যদি খতিয়ে দেখার মতো প্রয়োজনীয়তা রয়েছে সেগুলো দেখা হবে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ২৯৮ আসনে ভোটের হার ৪১.৮ শতাংশ। নির্বাচন কমিশন দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৯৮ বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এসব আসনের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ২২৩টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ এবং বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি করে আর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬১টি আসনে বিজয়ী হয়েছেন।

বিজয়ীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ছাড়া জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির দুই প্রার্থী নৌকা প্রতীকে জিতেছেন। সে সময় সাংবাদিকরা সিইসির কাছে প্রশ্ন করেন, আমাদের কাছে হিসাব রয়েছে, আওয়ামী লীগ জয় পেয়েছে ২২২ আসনে। তখন কাজী হাবিবুল আউয়াল জানান, দল ওয়ারি আসনের বিষয়টি ভালোভাবে দেখে সঠিক পরিসংখ্যান দেওয়া হবে।