গাজি হামাদ, ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য। তিনি বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি সম্প্রসারণের জন্য তার সংগঠন প্রচুর পরিশ্রম করছে।

যারা এ কার্যক্রমে মধ্যস্থতাকারী (কাতার, মিশর, যুক্তরাষ্ট্র) হিসেবে আছে তাদের সঙ্গে ‘সমঝোতা’ বজায় রেখে যুদ্ধবিরতির সময় বাড়াতে কাজ চালানো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) আল জাজিরাকে কথাগুলো বলেন গাজি হামাদ। গত ৭ অক্টোবর হামাসের অতর্কিত হামলায় বেসামাল হয়ে পড়ে ইসরায়েল। কিছু সময় পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় হামলে পড়ে। মারাত্মক মানবিক পরিস্থিতি তৈরি করে ফেলা হয় গাজা।

পুরো উপত্যকা ধরে বয়ে যায় রক্তের স্রোত, চিকিৎসা-খাবার না পেয়ে মারা যায় শত শত ফিলিস্তিনি নারী-শিশু। বিশ্বমঞ্চে হত্যা-নির্যাতনের সচিত্র ফুটে ওঠার পর ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়। নেপথ্যে আসে কাতার। সিদ্ধান্ত হয় দুই পক্ষের বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে যুদ্ধ বিরতি হবে।

গত শুক্রবার থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। প্রথমে চারদিন, পরে দুদিনের যুদ্ধবিরতিতে রয়েছে হামাস, ইসরায়েল। এর মধ্যেও গাজায় হত্যা হয়েছে, মেরে ফেলা হয়েছে পশ্চিম তীরের বহু মানুষকে। এ অবস্থায় আবারও যুদ্ধ বিরতির আহ্বান করছেন পোপ ফ্রান্সিসসহ বহু মানুষ। কিন্তু পরিস্থিতি সহজ নয়।

গাজি হামাদও আল জাজিরাকে সে কথাই বলেছেন। তিনি বলেন, পরিস্থিতি সহজ নয়। সময়ে সময় পরিবর্তন হচ্ছে। তবুও আশা করি যুদ্ধবিরতি বাড়ানো হবে।

তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে জিম্মিদের মুক্তি দিতে প্রস্তুত। আমরা কীভাবে এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি তা দেখার জন্য আমরা কাতার ও মিশরে আমাদের ভাইদের সাথে যোগাযোগ করছি। আমি আশা করি যুদ্ধবিরতি আজ বাস্তবায়ন করা যেতে পারে এবং আমরা এক্সটেনশনের জন্য আরও দিন দেখতে পাব।

হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর এ সদস্য আরও বলেন, সামরিক-বেসামরিক সবাইকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি আলোচনার টেবিলে রাখা হয়েছে। একটি সন্তুষ্টিজনক সমঝোতার জন্য মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।

আমাদের লক্ষ্য যুদ্ধবিরতির সম্প্রসারণ। হামাসের নেতৃত্ব একটি বড় চুক্তি এবং এ ব্যাপারে আমরা গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। এর মাধ্যমে গাজার সমস্ত বন্দী ফিলিস্তিনিদের মুক্ত করা হবে। আমরা ইসরায়েলি কারাগারে থাকা সমস্ত ফিলিস্তিনি বন্দীর মুক্তির ব্যাপারে আগ্রহী। সঙ্গে আমাদের এ গ্যারান্টিও দিতে হবে যে তাদের আর কখনও গ্রেপ্তার করা হবে না।

উল্লেখ্য, যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ইসরায়েলি কারাগার থেকে নতুন করে আরও ৩০ জন ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে ১২ জন বন্দিকে মুক্ত করে দিয়েছে হামাস।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন হামাসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া ১২ জনের মধ্যে ১০ জন ইসরায়েলি রয়েছে যাদের মধ্যে একটি শিশু এবং ৯ জন নারী। এই দফায় মুক্তি পাওয়াদের মধ্যে বাকি দুজন থাই নাগরিক।