মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ ও ‘ইতিবাচক’ মন্তব্য করে পদ হারালেন ছাত্রলীগের অন্তত ২৫৩ নেতাকর্মী। তাদের সংগঠনের পদ থেকে অব্যাহতি বা বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে এ হিসাবও সম্পূর্ণ নয় বলে জানিয়েছে ছাত্রলীগ।

সোমবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম পান্থ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘সাঈদীর মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করায় শতাধিক নেতাকর্মীকে অব্যাহতি ও বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে এখনো আমাদের হাতে সব খবর পৌঁছায়নি। এখনো কিছু কিছু জায়গায় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। দপ্তর সেলে সব ডেটাবেইস করে রাখা হবে। সব ডেটা পৌঁছালে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।’

কারাবন্দি সাঈদী ১৪ আগস্ট রাতে হাসপাতালে মারা যান। এতে শোক জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মন্তব্য পোস্ট করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এর পর ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় তিন নেতাকে অব্যাহতি দেওয়ার মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগে অব্যাহতি ও বহিষ্কার শুরু হয়।

সর্বশেষ সোমবার পাবনায় পাঁচ দিনে ২৮ নেতাকর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে জেলা ছাত্রলীগ। ২৮ নেতাকর্মী বহিষ্কারের কথা বলা হলেও ভাঁড়ারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম শেখ রকি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের ৩ সহসভাপতিসহ ১৫ নেতাকর্মীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আর নওগাঁয় ১৪ নেতাকর্মীকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে জেলা ছাত্রলীগ।

এ ছাড়াও বরিশালের উজিরপুরে ৫ জন, যশোর জেলা ছাত্রলীগের ১ জন ও গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর ৬ জন, চট্টগ্রামের লোহাগাড়া সাতকানিয়ায় আরও ২১ জন, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের ৩ জন, জামালপুরে ১৯ জন, নরসিংদীতে ৬ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৭ জন, ফেনীতে ২০ জন, রংপুরে ১৪ জন, সিলেটে ১২ জন, সুনামগঞ্জে ১৫ জন, লালমনিরহাটে ১২ জন, কক্সবাজারের পূর্ব বড় ভেওলায় ৩ জন, গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় ১ জন ও কাশিয়ানীতে ৬ জন, সাতক্ষীরায় ৩ জন, পিরোজপুরের নাজিরপুরে ২ জন, ময়মনসিংহের নান্দাইলে ৩ জন, বরিশালে ৪ জন, পটুয়াখালীতে ৩ জন, ভোলার দৌলতখানে ৪ জন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ জনকে ছাত্রলীগের পদ থেকে এখন পর্যন্ত অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া নেত্রকোনার কলমাকান্দায় ১ জনকে শোকজ করা হয়েছে।

ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীর পক্ষে সাফাই গাওয়ার ন্যূনতম সুযোগ আমাদের সংগঠনে নেই। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট সব ইউনিটকে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলেছি। প্রয়োজনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বৃহত্তরভাবে একটি শুদ্ধি অভিযান চালাবে।’