আগামী ১৭ আগস্ট শুরু হতে যাচ্ছে ২০২৩ সালের উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা। তবে পরীক্ষার্থীদের একটি অংশ ও তাদের অভিভাবকরা চান এখনই পরীক্ষা শুরু না করে আরও কিছুদিন যেন পিছিয়ে দেওয়া হয়। দাবির পাশাপাশি এ জন্য শিক্ষার্থীরা আন্দোলনও শুরু করেছেন। তবে শিক্ষা বোর্ডগুলো বলছে, এখন পর্যন্ত পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই এবং ঘোষিত সময়েই পরীক্ষা শুরু হবে।

দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ চলছে। তাছাড়া এবার পরীক্ষার্থীদের তুলনামূলক কম সময় পেয়েও পূর্ণ নম্বরে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। ফলে ব্যাপক মানসিক চাপে পড়েছেন তারা।

এদিকে কোনো কোনো এলাকায় অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা–সংক্রান্ত সমস্যা হচ্ছে। এ কারণে কোনো কোনো পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের দাবি, পরীক্ষাটি যেন আরও কিছুদিন পিছিয়ে দেওয়া হয়।

পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থী‍রা প্রায় আড়াই বছর সময় পেয়েছিলেন। আড়াই বছর সময় নিয়ে তাদের পরীক্ষা হয় ৫০ নম্বরের। কিন্তু ২০২৩ সালে পরীক্ষার্থী‍রা মাত্র দেড় বছর সময় পেয়েছেন। তুলনামূলক এক বছর কম সময় পাওয়ার পরও তাদের ১০০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। তাছাড়া গত বছর আইসিটি সাবজেক্টের পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। কিন্তু এবার এ সাবজেক্টেও পরীক্ষা দিতে হচ্ছে।

এসব বিষয় নিয়ে বেশকিছু দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন পরীক্ষার্থী‍রা। শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রণালয় ও বোর্ডের ই-মেইল ও সামাজিকমাধ্যমে বার্তা পাঠাচ্ছেন তারা। পরীক্ষার্থী‍দের অভিযোগ, তাদের মতামতের কোনো গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।

দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গতকাল সোমবার পরীক্ষার্থীদের একাংশ সড়কে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল করে।

এ বিষয়ে আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় উপ কমিটির প্রধান ও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘১৭ আগস্ট শুরু হচ্ছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। ইতিমধ্যে সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যান্য প্রস্তুতিও প্রায় সম্পন্ন।’

শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত জুলাই মাসে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল শিক্ষা বোর্ডগুলো। কিন্তু তা নিয়ে আপত্তি ওঠে। কারণ, সেটি হলে পরীক্ষার্থীদের উচ্চমাধ্যমিক ক্লাস শুরুর পর এক বছর তিন মাসেই (১৫ মাস) এ পরীক্ষায় বসতে হতো। অথচ উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষাবর্ষ দুই বছরের। এ কারণে শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকেরা বলে আসছিলেন, তাড়াহুড়া করে পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনায় শিক্ষার্থীরা পড়ার চাপে পড়ে। এতে শিখনঘাটতি থেকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আবার জুলাইয়ে পরীক্ষা হলেও এসব শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ভর্তি পরীক্ষা হবে আগামী বছরের এপ্রিল থেকে জুন-জুলাইয়ে।

তাই বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে শিক্ষা বোর্ডগুলো জুলাইয়ের পরিবর্তে আগস্টে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

এদিকে আসন্ন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্ত ও ইতিবাচক পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার এ–সংক্রান্ত জাতীয় মনিটরিং ও আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক কমিটির সভা ডাকা হয়েছে। বেলা তিনটায় সভা শেষে এ বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করবেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।