মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আইনী ঝামেলা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। তবে আগামী ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য রিপাবলিকান প্রার্থীদের মধ্যে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা একটুও কমেনি। আজ বৃহস্পতিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিপাবলিকানের মধ্যে অন্য সব মনোনয়নপ্রত্যাশীদের চেয়ে তিনি অনেক অনেক এগিয়ে। দেশটিতে ফৌজদারি মামলাগুলোতে অভিযুক্ত হবার পর তার অবস্থান যেন আরও শক্তিশালী হয়েছে।
গত চার মাসে ট্রাম্প তিনটি মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে ট্রাম্প জর্জিয়ায় চতুর্থ আরেকটি মামলায় অভিযুক্ত হতে পারেন। এখানে অভিযাগ- ২০২০ সালের নির্বাচনে এখানে তার পরাজয়কে উল্টে দিতে তিনি রাজ্য কর্মকর্তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করেছিলেন।
তবে এতো কিছুর পরেও ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারাভিযান থামেনি বরং তাতে আরও গতিসঞ্চার হয়েছে। ৩১ জুলাই একাধিক জনমত জরিপের এক গড় থেকে দেখা যায়, ডোনাল্ড ট্রাম্প এসব জরিপে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিসান্টিসের চাইতে ৩৭ পয়েন্টের বড় ব্যবধানে এগিয়ে আছেন।
রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হবার জন্য ১৪ জন লড়াই করছেন। কিন্তু তাদের কারোর পক্ষেই, এমনকি ৬ শতাংশ জনসমর্থনও নেই। দের অর্ধেকেরও বেশি প্রার্থী এমনকি ১% সমর্থনও পাননি।
কিন্তু এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিও চিত্রটা ছিল ভিন্ন। তখন ট্রাম্প ও ডেসান্টিসের মধ্যে জনসমর্থনের পার্থক্য ছিল মাত্র দুই শতাংশ (যথাক্রমে ৪১% ও ৩৯%)।
কিন্তু তার পর থেকে ফ্লোরিডার গভর্নরের সমর্থন ক্রমাগত নিচের দিকে নেমেছে। অন্যদিকে ট্রাম্পের পক্ষে সমর্থন এখনও পাথরের মত শক্ত। তার জনপ্রিয়তায় এতটুক আঁচড় লাগেনি।
গত এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে ট্রাম্প যখন প্রথমবারের মতো অভিযুক্ত হলেন- তার পর থেকে বস্তুত তার পক্ষে সমর্থন বেড়েছে। যদিওট্রাম্পই হলেন ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হওয়া প্রথম সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তার প্রথমবার গ্রেফতার হওয়া ও আদালতে হাজিরা দেবার পর থেকে ট্রাম্পই পরিণত হয়েছেন রিপাবলিকান ভোটারদের প্রথম পছন্দে।
রিপাবলিকান ভোটাররা মনে করেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এসব মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মার্কিন ইপসসের শীর্ষস্থানীয় একজন কর্মকর্তা ক্লিফোর্ড ইয়ং মনে করছেন,
ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার সমর্থকদের মধ্যে যে একাত্মতাবোধ – তা ভাঙা কঠিন হবে। তিনি বলেছেন, রিপাবলিকান ভোটারদের ৪০ থেকে ৪৫%-ই ট্রাম্প সমর্থক। তারা ট্রাম্পের চোখ দিয়েই দুনিয়াকে দেখে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিবিসির অংশীদার হচ্ছে সিবিএস নিউজ। তাদের জুন মাসের এক জনমত জরিপে দেখা যায়, রিপাবলিকানদের ভোট দিতে পারেন এমন ৭৬ শতাংশ ভোটার বলেছেন, গোপন দলিলপত্র মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
রিপাবলিকান ভোটারদের ৬১ শতাংশ বলেছেন, ট্রাম্প অভিযুক্ত হওয়ার পরও তার ব্যাপারে তাদের দৃষ্টিভঙ্গী বদলায়নি। ১৪ শতাংশ বলেছেন, তারা এখন ট্রাম্পকে আরও বেশি ইতিবাচকভাবে দেখছেন।
ট্রাম্প তৃতীয় বা এমনকি চতুর্থ মামলায় অভিযুক্ত হলেও রিপাবলিকান প্রার্থিতার প্রতিযোগিতায় তেমন কোনো প্রভাব পড়বে বলে এখনো মনে হচ্ছে না।
মার্চ মাসে সিএনএনএর এক জরিপে দেখা যায়, রিপাবলিকানদের মধ্যে ৮৪ শতাংশই মনে করেন জো বাইডেন আইনসিদ্ধভাবে ২০২০-এর নির্বাচন জেতেননি। তাই ওই নির্বাচনের ফল চ্যালেঞ্জ করার অভিযোগ রিপাবলিকানদের মধ্যে তেমন কোন আলোড়ন সৃষ্টি করবে না।
সাম্প্রতিক ইকনোমিস্ট-ইউগভের জরিপে দেখা যায়, বাইডেন ৪৪%-৪০% ব্যবধানে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন। আর মর্নিং কনসাল্টের আরেক জরিপে বাইডেন এগিয়ে আছেন ৪৩%-৪১% অর্থাৎ মাত্র দুই পয়েন্ট ব্যবধানে।