প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নৌবাহিনীকে আমরা আরও সক্ষম করে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। আমরা গত সাড়ে চৌদ্দ বছরে সশস্ত্র বাহিনী যাতে আরও সক্ষমতা অর্জন করতে পারে, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয় সে জন্য ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করেছি।’

আজ বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নবনির্মিত ঘাঁটি বানৌজা শের-ই-বাংলা, ৪১ পিসিএস এর চারটি জাহাজ এবং চারটি এলসিইউ-এর কমিশনিং অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ (ভার্চুয়ালি) করে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সমুদ্র সম্পদ অর্থনৈতিক কাজে লাগানোর জন্য ব্লু ইকোনমি আমরা গ্রহণ করেছি। তার মাধ্যমে আমাদের আর্থসমাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। আমরা চাই আমাদের দেশ আরও এগিয়ে যাক। আমাদের নৌবাহিনী অনেক সক্ষমতা অর্জন করেছে। তারা আন্তর্জাতিকভাবে সুনাম অর্জন করছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে বিশ্বমানের নৌবাহিনী গড়ে তুলতে আমাদের পদক্ষেপ আরও একবার এগিয়ে যাবে।’

প্রধানমন্ত্রী পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নৌবাহিনীর নবীন নাবিকদের প্রশিক্ষণ ও এভিয়েশন সুবিধা সম্বলিত ঘাঁটি বানৌজা শের-ই-বাংলার কমিশনিং করেন।

একইসঙ্গে নৌবাহিনীর নিজস্ব তত্ত্বাবধানে খুলনা শিপইয়ার্ডে পেট্রোল ক্রাফট স্কোয়াড্রোনের চারটি যুদ্ধজাহাজ বানৌজা শহীদ দৌলত, শহীদ ফরিদ, শহীদ মহিবুল্লাহ ও শহীদ আখতার উদ্দিন এবং চারটি ল্যান্ডিং ক্রাফট ইউটিলিটি (এলসিইউ) বানৌজা ডলফিন, তিমি, টুনা ও পেঙ্গুইনের কমিশনিং করেন।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পায়রাবন্দরসহ উপকূলীয় এলাকার সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় এই ঘাঁটি নৌবাহিনীর সক্ষমতা বাড়াবে। পাশাপাশি নৌ সদস্যদের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষায়, বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকার দেশি ও বিদেশি ব্যবসা-বাণিজ্য নিরাপত্তায় একটি বিশেষায়িত ও স্থায়ী ঘাঁটির গুরুত্ব বিবেচনায় ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ বাস্তবায়নে এই ঘাঁটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর ‘বানৌজা শের-ই-বাংলা’ ঘাঁটির নামফলক উন্মোচিত হয়। আধুনিক সব সুবিধায় ‘বানৌজা শের-ই-বাংলা’ ঘাঁটিতে গড়ে তোলা হয়েছে নবীন নাবিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এর পাশাপাশি অপারেশনাল কার্যক্রমের সুবিধার্থে প্রশাসনিক ভবন, এভিয়েশন সাপোর্ট ও হ্যাঙ্গার সুবিধা মাল্টিপারপাস শেড, বিভিন্ন রিপেয়ার ও মেইন্টেন্যাস ওয়ার্কশপ রয়েছে। এছাড়া ঘাঁটিতে এভিয়েশন সুবিধা, ডাইভিং স্যালভেজের কমান্ডো পরিচালনা সম্বলিত ইউনিট, নৌবাহিনী স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল রয়েছে।

সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডে নির্মিত চারটি পেট্রোল ক্রাফট নৌবহরে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলে সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকার সুরক্ষা আরও সুদৃঢ় হবে।