টানা ১৬ মাস ধরে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। দীর্ঘ এ সময়ে পূর্ব এবং দক্ষিণ ইউক্রেন থেকে বহু মানুষ ও শিশুকে জোর করে নিজেদের দেশে নিয়ে গেছে রাশিয়া। বস্তুত শহর অবরুদ্ধ করেও ইউক্রেনের নাগরিক এবং শিশুদের রাশিয়ায় যেতে বাধ্য করার ঘটনা ঘটেছে।

জোরপূর্বক নির্বাসিত শিশুদের নিয়ে ইউক্রেন নানা সময়ে মন্তব্য করলেও কখনই তাদের প্রকৃত সংখ্যা সামনে আসেনি। তবে এবার সেই সংখ্যা সামনে এসেছে। মস্কো বলেছে, ইউক্রেনের সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলের প্রায় ৭ লাখ শিশু বর্তমানে রাশিয়ায় রয়েছে।

সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনীয় শিশুদের রুশ ভূখণ্ডে নিয়ে আসা সম্পর্কে কথা বলেছেন রাশিয়ার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ ফেডারেশন কাউন্সিলের আন্তর্জাতিক কমিটির প্রধান গ্রিগরি কারাসিন। রোববার গভীর রাতে তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের সংঘাতপূর্ণ অঞ্চল থেকে প্রায় ৭ লাখ শিশুকে রুশ ভূখণ্ডে নিয়ে এসেছে রাশিয়া।

কারাসিন তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে লিখেছেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ৭ লাখ শিশু আমাদের কাছে আশ্রয় পেয়েছে। ইউক্রেনের সংঘাতপূর্ণ এলাকায় বোমা হামলা এবং গোলাবর্ষণ থেকে পালিয়ে তারা এখানে আশ্রয় নিয়েছে।’

রয়টার্স বলছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এরপর ইউক্রেনীয় বহু শিশুকে রুশ ভূখণ্ডে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মস্কো বলেছে, ইউক্রেন থেকে শিশুদের রাশিয়ার ভূখণ্ডে নেওয়ার কারণ হলো সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে এতিম ও পরিত্যক্ত শিশুদের রক্ষা করা।

তবে ইউক্রেন বলছে, অনেক শিশুকে অবৈধভাবে তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও বলছে, হাজার হাজার শিশুকে জোরপূর্বক তাদের বাড়ি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

২০২২ সালের জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্র অনুমান করে জানিয়েছিল, ২ লাখ ৬০ হাজার শিশুকে ‘জোরপূর্বক নির্বাসনে’ নিয়ে গেছে রাশিয়া।

অন্যদিকে ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চলগুলোর একীকরণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতে, বর্তমানে ১৯ হাজার ৪৯২ ইউক্রেনীয় শিশু অবৈধভাবে রুশ ভূখণ্ডে নির্বাসিত অবস্থায় রয়েছে।

অবশ্য চলতি বছরের মার্চ মাসের শেষের দিকে এক প্রতিবেদনে রয়টার্স বলেছিল, রাশিয়া টানা ১৩ মাস ধরে তার প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে তাতে এখন পর্যন্ত লাখ লাখ মানুষ পরিবার এবং শিশুসহ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

এছাড়া রাশিয়ায় জোরপূর্বক নির্বাসিত করা শিশুদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করাও অসম্ভব বলে ওই সময় জানিয়েছিল বার্তা সংস্থাটি।