আগামী নির্বাচনসহ মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিউয়নের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে দেড় ঘন্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছে বিএনপি। রবিবার সকালে বৈঠক শেষে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের কাছে একথা জানান।

তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন দেশের মানুষ যেভাবে পর্যবেক্ষণ করছে দেশের বর্তমান অবস্থা ও নির্বাচন, সারা বিশ্বের যারা গণতান্ত্রিক দেশ আছে তারা সবাই ও নিবিড়ভাবে বাংলাদেশকে পর্যবেক্ষণ করছে। তার অংশ হিসেবে তারা (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) দেখছে, বাংলাদে্শের বর্তমান গণতান্ত্রিক অবস্থা কি? মানবাধিকার, আইনের শাসন শাসন, মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেমন। বিশেষ করে আগামী নির্বাচন নিয়ে যে শঙ্কা কাজ করছে দেশের ভেতরে, দেশের বাইরে সেটার ওপর তো তাদের স্বাভাবিকভাবে একটা দৃষ্টি আছে। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আজকের এই আলোপটা।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। প্রতিনিধি দলের ছিলেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান। গুলশানে এবিসি হাউজে সকাল ১০টা থেকে দেড় ঘন্টা এই বৈঠক হয়। বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চালর্স হোয়াইটির নেতৃত্বে ফ্রান্স, ইতালি, সুইডেন, জার্মানি, স্পেন, নেদারল্যান্ডস এই রাষ্ট্রদূতরা ছিলেন।

নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে কী আলাপ হয়েছে জানতে চাইলে আমীর খসুর মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সেটাই তো। বাংলাদেশে যে নির্বাচনী ব্যবস্থাটা ভেঙে পড়েছে, এখানে যে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে একটা অবৈধ সরকার ক্ষমতায় বসে আছে। এই প্রেক্ষাপটই তো আলোচনা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপট থাকার কারণেই তো এই সব আলোচনা চলছে।’

তিনি আরো বলেন, আগামী নির্বাচনে যদি দেশের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না পারে তাহলে বাংলাদেশ সংকটের দিকে যাবে এই শঙ্কা দেশের ভেতরে যেভাবে কাজ করছে, দেশের বাইরেও কাজ করছে। এই শঙ্কা থেকে তারা (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) জানতে চাচ্ছে যে, কিভাবে আগামী নির্বাচনটা হতে যাচ্ছে, কিভাবে এটাকে নিরপেক্ষ অংশগ্রহনমূলক করা যায়। সকলের উদ্দেশ্য একটাই-বাংলাদেশের মানুষের যে চিন্তা যে এটাকে নিরপেক্ষ, অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন যার মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সংসদ হবে, নির্বাচিত সরকার হবে। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলোচনাটা হচ্ছে।’

নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান কি আপনারা ইউরোপীয় ইউনিয়নকে পরিস্কার করেছেন কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই এই সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না-সেটা আমরা খোলাখুলিভাবে বলেছি। বিশ্বের যারা বাংলাদেশের ওপর নিবিড়ভাবে কাজ করছে, পর্যবেক্ষণ করছে সবার আছে এটা পরিস্কার করা হয়েছে যে, বর্তমান দখলদার, অনির্বাচিত সরকারের অধীনে বাংলাদেশের জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের প্রতিনিধি, তাদের সরকার, তাদের সংসদ নির্বাচিত করতে পারবে না। এই বিষয়টা প্রতিনিয়ত যেভাবে বলা হচ্ছে, তাদের জানা আছে।’‘এটার কারণগুলো সবার কাছেই জানা আছে। এমন যে না যে একটা কথা বলা হয়েছে। এই কথার পেছনে যে কারণগুলো আছে সেই কারণগুলো এখন আলোচনা হচ্ছে, বিশ্লেষন হচ্ছে।’

বিষয়গুলো নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কী মনে করে জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, ‘তারা কি মনে করেন সেটা তারাই বলতে পারবে। আমি তো বলতে পারবো না।”নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনুসের বিষয় আলোচনায় উঠেছে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনুস সাহেবের ইস্যু নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।’

রাকিব/এখন সময়