নিউজিল্যান্ডের উত্তরে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে প্রায় ৪৬,০০০ বাড়িতে নেই কোনো বিদ্যুৎ। ভারী বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে শত শত ফ্লাইট বাতিল করা করেছে কতৃপক্ষ। ঘূর্ণিঝড় গ্যাব্রিয়েলার প্রভাবে দমকা হওয়া, প্রবল বর্ষণ ও জলোচ্ছ্বাস শুরু হয়েছে নিউজিল্যান্ডে। ঘূর্ণিঝড় গ্যাব্রিয়েলার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বৃহত্তম শহর অকল্যান্ড, নর্থ আইল্যান্ড এবং এর আশপাশের এলাকায়। ঘূর্ণিঝড় গ্যাব্রিয়েল গত শনিবার রাতে অস্ট্রেলিয়ার তাসমান সাগরে নরফোক দ্বীপপুঞ্জের কাছে ঘনীভূত হয়। বর্তমানে ঘূর্ণিঝড়টি নিউজিল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের কাছাকাছি অবস্থান করছে।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা কিংবা মঙ্গলবার ভোরের দিকে নিউজিল্যান্ডের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে গ্যাব্রিয়েলা। গ্যাব্রিয়েল উত্তর দ্বীপের কাছাকাছি হওয়ায় কিছু এলাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। অকল্যান্ড এবং আশেপাশের অঞ্চলে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যায় চারজন নিহত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরেই এলো ‘ঘূর্নিঝড় গ্যাব্রিয়ে ’। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স বলেছেন, একটির পেছনে একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা ঘটেছেই।

জরুরী ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী কিয়েরান ম্যাকআনাল্টি সোমবার একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, সরকার দেশের ইতিহাসে তৃতীয়বারের মতো জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার কথা বিবেচনা করছে। তিনি আরো বলেন, প্রচণ্ড বাতাস ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ঘূর্ণিঝড়টি অত্যন্ত বিপজ্জনক। ইতিমধ্যেই অকল্যান্ডসহ উত্তরাঞ্চলের পাঁচটি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষণাটি স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে বিপজ্জনক পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সাহায্য করবে।

নিউজিল্যান্ডের আবহাওয়া সংস্থা মেটসার্ভিস জানিয়েছে, অকল্যান্ডের উত্তরে অবস্থিত শহর ওয়াঙ্গারেই গত ১২ ঘণ্টায় ১০০.৫ মিমি (৪ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ সময় অকল্যান্ডের সাগর তীরবর্তী এলাকায় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫৯ কিলোমিটার (১০০ মাইল)। ম্যাকআনাল্টি সতর্ক করেছেন, পাওয়ার গ্রিড পুনরুদ্ধার করতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে। কারণ খারাপ আবহাওয়ার কারণে সেখানে কাজ করা ‘অনিরাপদ’।

আবহাওয়া কর্মকর্তারা এর আগে গ্যাব্রিয়েলের তীব্রতা কমেছে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু মেটসার্ভিস আজ সোমবার তার সর্বশেষ আপডেটে জানিয়েছে, এটি এখনও শক্তিশালী। ইতিমধ্যেই এর প্রভাবে গাছপালা ভেঙ্গে গেছে, রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং বিদ্যুতের লাইন ভেঙে গেছে। অকল্যান্ড এবং উত্তর দ্বীপ জুড়ে অনেক স্কুল এবং স্থানীয় সরকারী সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫০৯টি ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

রাকিব/এখন সময়