৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা আজ রোববার শুরু হচ্ছে। এতে অংশ নিবে মোট ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ২২ হাজার ৭৯৬ জন এবং ছাত্রী ৫ লাখ ৮০ হাজার ৬১১ জন। গত বছর পরীক্ষার্থী ছিল প্রায় ১৪ লাখ। এ বছর পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী গত বছরের তুলনায় প্রায় ২ লাখ কমেছে। প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এবার নজরদারিতে শিক্ষক-কর্মকর্তারা। সদ্য শেষ হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীন কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে থানায় রাখা কয়েকটি বিষয়ের প্রশ্নপত্র পরীক্ষা শুরুর দিনের আগেই বের করে আনা হয়। কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলার একটি কেন্দ্রে দায়িত্বরত কেন্দ্র সচিবের মাধ্যমে প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বোর্ডের ওই সব বিষয়ের পরীক্ষা বাতিল করে নতুন তারিখে নেওয়া হয়। ওই ঘটনার তথ্যের ভিত্তিতেই এবার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে কোথায় ব্যত্যয় ছিল, আর যেন কোনো ব্যত্যয় না থাকে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে আসন্ন এইচএসসি, আলিম ও এইচএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বাছাই ও বিতরণ প্রক্রিয়ায়। এর অংশ হিসেবে নজরদারি বাড়ানো হবে কেন্দ্র সচিবদের ওপর। এছাড়া পরীক্ষায় দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের দায়িত্ব পালনকালে সশরীরে উপস্থিত থেকে প্রশ্নপত্র বাছাই, সংগ্রহ ও বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। কেউ তার মনোনীত ব্যক্তি বা প্রতিনিধি দিয়ে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। আবার কেন্দ্র সচিব তার প্রতিনিধি পাঠালে তাকে প্রশ্নপত্র দেওয়া হবে না।

পরীক্ষার ব্যবস্থাপনা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। জেলা থেকে প্রশ্নপত্র বিতরণের সময় সেখানে জেলা ট্রেজারি কর্মকর্তার প্রতিনিধি নিয়োগ করা যাবে না। বিতরণের সময় জেলা ট্রেজারি কর্মকর্তাকে উপস্থিত থাকতে হবে। উপজেলা পর্যায়ে পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির তত্ত্বাবধায়ক কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দায়িত্ব পালন করবেন। উপজেলা পর্যায়ে প্রশ্ন বাছাই ও বিতরণের সময় ইউএনওকে বাধ্যতামূলক উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগে সেখানে ইউএনও’র প্রতিনিধি পাঠানো যেতো।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, অসুস্থতা বা গুরুত্বপূর্ণ কাজে কর্মস্থলে সে সময় তিনি উপস্থিত থাকতে না পারলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অথবা উপজেলার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা বোর্ডগুলোর নির্দেশনা অনুযায়ী, পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে। অনিবার্য কারণে দেরিতে প্রবেশ করতে দিলে সেই পরীক্ষার্থীর রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্বের কারণ ইত্যাদি একটি রেজিস্ট্রারে লিখে ওই দিনই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন দিতে হবে। আর কোন সেট প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে, তা পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে জানানো হবে। তিনি বলেন, কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (কেন্দ্রসচিব) ছাড়া অন্য কেউ মুঠোফোন বা ইলেকট্রনিক যন্ত্র নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও ছবি তোলা যায় না, এমন একটি সাধারণ ফোন ব্যবহার করতে পারবেন।

রাকিব/এখন সময়